বামপন্থা ও গণতন্ত্রের কথোপকথন

[শিল্প]

[শিল্প]

অতিমারির দর্শন: বার্গম্যান বনাম বুনুয়েল

শরণ্য বৈদ্য

photo

শ্রমজীবী ভাষা, ১ এপ্রিল, ২০২২— সময়টা ভাল যাচ্ছে না কারোর-ই। কোভিড অতিমারি সমগ্র পৃথিবীর সামনে মেলে ধরেছে অস্তিত্বের এক ভয়াবহ সঙ্কট। কোভিডের একের পর এক ঢেউয়ের ধাক্কায় জনজীবন রীতিমতো বেসামাল – অতিমারির অতলান্তিকে ভেসে চলা এক দিশাহীন জাহাজ। অর্থনীতি, সমাজব্যবস্থা, মনস্তত্ত্ব সবকিছুর ওপর ঘনিয়ে এসেছে অতিমারির প্রকোপ। আক্রান্ত সংস্কৃতিও। আর এখানেই মূর্ত বাস্তব হয়ে উঠছে অতিমারির শিল্পভাষা। অতিমারির যন্ত্রণার সৌন্দর্য। স্মৃতিতে আবছা হয়ে ভেসে উঠছে সুদূর অতীতে অতিমারি, তার যন্ত্রণাকে, গভীরভাবে ফুটিয়ে তোলা দুটি চলচ্চিত্র – ইঙ্গমার বার্গম্যান পরিচালিত ‘সেভেন্থ সিল’ (১৯৫৭) ও লুই বুনুয়েল পরিচালিত ‘নাজারিন’ (১৯৫৯)।

ইঙ্গমার বার্গম্যান ও লুই বুনুয়েল পরস্পর সমসাময়িক। দু’ জনের ছবি-ই অপ্রতিরোধ্য বাস্তব। পাঁচের দশকে তাঁরা যখন আস্তে আস্তে জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠছেন, সে সময় বিশ্ব রাজনীতি রীতিমতো ছন্নছাড়া, ফুটে উঠছে তার করুণ দশা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা তখনও কার্যত তাড়া করে বেড়াচ্ছে তামাম দুনিয়াবাসীকে। যুদ্ধ থেকে কপালজোরে বেঁচে ফেরা মানুষদের সামনে বারবার দুঃস্বপ্নের মতো প্রতিভাত হচ্ছে মৃত্যুর যন্ত্রণা ও জীবনের নিরাপত্তাহীনতা। এই মৃত্যুযন্ত্রণার-ই উজ্জ্বল উদ্ধার ‘সেভেন্থ সিল’ ও ‘নাজারিন’।

লক্ষণীয় বিষয় হল এই দুটি ছবিতেই অতিমারির প্রসঙ্গ নিমিত্তমাত্র। বরং এই দুটি ছবিতেই অতিমারি মৃত্যুর দ্যোতক। অতিমারিসঞ্জাত শত শত মানুষের মৃত্যুমিছিলে শামিল হয়ে বা তার মধ্য দিয়ে ইঙ্গমার বার্গম্যান ও লুই বুনুয়েল স্পর্শ করতে চেয়েছেন মৃত্যুর বিভীষিকা, খুঁজতে চেয়েছেন মৃত্যুর স্বরূপ, তুলে ধরেছেন মৃত্যুর সামনে অসহায় মানুষের জীবনের অন্তিম মুহূর্ত পর্যন্ত বেঁচে থাকার কাতর অনুনয়।

মৃত্যুর মানবসত্তা



অবশ্য মৃত্যু প্রসঙ্গে দু’ জনের দৃষ্টিভঙ্গি এক্ষেত্রে চোখে পড়ার মতো বিষয়। যেমন ইঙ্গমার বার্গম্যান। যাঁর অকপট স্বীকারোক্তি, “আমি খুব বড় ধরনের নৃশংসতা ঠিক আত্মস্থ করতে পারি না। সে-সব আমাকে ঠিক স্পর্শ করে না। বড়জোর আমি এই নৃশংসতার কথা এক ধরনের লালসা নিয়ে পড়তে পারি – যা হয়ে ওঠে এক আতঙ্কের পর্ণোগ্রাফি।”১ ‘আতঙ্কের পর্ণোগ্রাফি’ হয়তো বার্গম্যানের অন্যান্য ছবির তুলনায় ‘সেভেন্থ সিল’ হয়ে উঠতে পারেনি ঠিক-ই, কিন্তু যে উচ্চমার্গীয় নান্দনিকতায় মৃত্যুর লালসার অবয়বে অতিমারির নৃশংসতাকে ছেনে-কুঁদে সিনেমার এক স্বতন্ত্র ভাষায় তৈরি করা হয়েছে তা বোধহয় বার্গম্যানের ছবির ক্ষেত্রে সত্যিই অদ্বিতীয়।

photo

‘সেভেন্থ সিল’-এর বিষয়বস্তু কৃষ্ণমৃত্যু (Black Death) অর্থাৎ ত্রয়োদশ শতকে ইউরোপ জুড়ে দেখা দেওয়া ভয়াবহ প্লেগ অতিমারির প্রাদুর্ভাব। সে যাত্রায় প্লেগের দাপট গোটা মহাদেশ জুড়ে চলেছিল প্রায় তিনশো বছর, নিহত হয়েছিলেন কয়েক লক্ষ মানুষ। কিন্তু আশ্চর্য, গোটা ছবিতে কোথাও শয়ে শয়ে মানুষের মৃত্যু দেখা যায় না। বরং সিনেমার ভাষায় প্রকাশ পায় মৃত্যুর মানবসত্তা (personification)। মৃত্যু সেখানে বার বার প্রতিভাত হন মানুষরূপে – এমন এক ব্যক্তি যিনি মানুষের সঙ্গে দাবা খেলেন, এই শর্তে যে, ততক্ষণ খেলা চলবে যতক্ষণ মৃত্যুর সঙ্গে দাবা খেলায় তারা অপরাজিত। বোঝাই যাচ্ছে দাবার রণকৌশলের আদর্শকে জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপের – বলা ভাল, কৌশলী পদক্ষেপের - সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা। কারণ অতিমারির মতো দাবাখেলাও বড় অনিশ্চিত। এই কৌশলী লড়াইয়ে কে যে কখন হারবে, মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বে, তা বলা রীতিমতো দুষ্কর।

মৃত্যু সে ধরে মৃত্যুর রূপ



মৃত্যুর হিমশীতল হিংস্রতার সামনে মানুষের অসহায় আত্মসমর্পণ বার্গম্যানের ‘সেভেন্থ সিল’-এর অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি। অতিমারি র এই গণনিধনযজ্ঞ থেকে মুক্তির আশা ঠিক সেই অর্থে দেখাতে পারেননি – কিংবা দেখাতে চাননি – বার্গম্যান। তাই ছবির শেষ দৃশ্য – মানবরূপী মৃত্যুর পিছন পিছন গড্ডলিকা প্রবাহের মতো বয়ে চলা মৃত্যুপথযাত্রীদের ঢল - দেখে মনে পড়ে যায় কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় অতিমারি নিয়ন্ত্রণে ভারত সরকারের কঙ্কালসার দশা। চোখের সামনে ভেসে ওঠে দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ সহ দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে তৈরি হওয়া হাড়হিম নরককুন্ড, যেখানে একাধারে জ্বালানো হচ্ছে সারি সারি গণচিতা, খোঁড়া হচ্ছে গণকবর। যেসব হতভাগ্য শবের কপালে চিতা বা কবর কিছুই জুটছে না, স্থানাভাবের ‘যুক্তি’ দেখিয়ে তাদের ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে গঙ্গায় – অন্তিম সৎকার না করেই। আর এই অন্ধকারের উৎস থেকে কিছুটা উৎসারিত আলো, লুই বুনুয়েলের ‘নাজারিন’।

বার্গম্যানের ছবি যদি হয়ে ওঠে আতঙ্কের পর্ণোগ্রাফি তবে বুনুয়েলের ছবি সেই আতঙ্ক ছিন্নভিন্ন করে আরো বিক্ষত এক বাস্তবকে তুলে ধরার মরিয়া চেষ্টা। প্রখ্যাত কবি ওক্তাভিও পাজের কথায়, “সৃজনশীল প্রতিভা আর শৈল্পিক বিবেক যদি স্বতোৎসারিত মুক্তির দ্বারা চালিত হয় তখন তারা যে কী কান্ড ঘটিয়ে ফেলতে পারে, বুনুয়েলের কাজ তার নিদর্শন।”২ তাই বুনুয়েলের ‘নাজারিন’ মৃত্যুর মানবরূপের পরিবর্তে সরাসরি তুলে ধরে মৃত্যুর যন্ত্রণা। শিল্পী হিসেবে বুনুয়েলের বিবেকবোধ গভীর প্রভাব ফেলেছে ‘নাজারিন’-এ। অতিমারির ভয়াবহতার চেয়েও শিল্পী বুনুয়েলের কাছে বড় হয়ে উঠেছে অতিমারির অতলান্তিকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন যাওয়া নিরীহ নিরপরাধ মানুষদের প্রতি তাঁর দায়। তাঁর সামাজিক কর্তব্যবোধ। শিল্পী হিসেবে এই দায়িত্ববোধ ফুটে উঠেছে তাঁর আগের বেশ কিছু ছবিতেও, যেমন ‘লোস ওলভিদাদোস’ (বিস্মৃত) (১৯৫০)। অবশ্য বার্গম্যানের মতো সেখানেও অপরাধপ্রবণ শৈশব থেকে মুক্তির দিশা দেখাতে পারেননি বুনুয়েল, সে দায়িত্বভার ছেড়ে দিয়েছেন দর্শক তথা সমাজের প্রগতিশীল অংশের ওপর। কিন্তু সেইসব অপরাধপ্রবণ পথশিশুদের প্রতি রয়ে গেছে তাঁর দায়। একজন শিল্পী হিসেবে। একজন মানুষ হিসেবে।

‘নাজারিন’-এর বিষয়বস্তুও প্লেগ অতিমাড়ি। তবে এর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ‘সেভেন্থ সিল’-এর তুলনায় অস্পষ্ট। মৃত্যুকে এখানে কোনও দেবতাজ্ঞানে মান্যতা দেওয়া হয়নি। ফুটে ওঠেনি তার মানবরূপ। বরং ধর্মীয় উপাখ্যানকে এখানে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছে যথাযথভাবে। ধর্ম যে মানুষকে কোনও বিপর্যয় থেকেই রক্ষা করতে পারে না, বরং অতিমারি সহ যে কোনও বড় ধরনের, ভয়াবহ বিপর্যয়ে ধর্ম বা ঈশ্বরের প্রতি মানুষের ভক্তি উবে যায়, ‘নাজারিন’ ছবিটি সে কথাই বারবার বলতে চেয়েছে দর্শকদের। চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে অন্তঃসারশূন্য ঈশ্বরভক্তি নয়, বরং বিজ্ঞানসম্মত মোকাবিলাই অতিমারি সহ যে কোনও বিপর্যয় থেকে মুক্তির উপায়। মৃত্যুর কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ নয়, বরং মৃত্যুর সঙ্গে রীতিমতো পাঞ্জা লড়ে জীবনের জয়গানই ‘নাজারিন’-এর মূলমন্ত্র। জনৈক খ্রিস্টান পাদ্রী সাহেব নিজের জীবন দিয়ে অনুধাবন করেছেন এই বাস্তবসত্য। তাই তিনি ধর্মকথার পরিবর্তে মানুষের কাছে এগিয়ে গেছেন, অসহায়, দুঃস্থ, মুমূর্ষু রোগীকে সেবা করার মহৎ উদ্দেশ্যে। সংক্রমণের ভয়কে হেলায় তুচ্ছ করে নিজ উদ্যোগে সৎকার করতে চেয়েছেন রাস্তায় ইতিউতি ছড়িয়ে থাকা প্লেগাক্রান্ত ব্যক্তিদের শব। এভাবেই ‘নাজারিন’ অতিমারির গঠনগত আঙ্গিককে চিনিয়ে দেয়। ছবিটি দেখতে দেখতে মনে পড়ে যায় কলকাতার রাস্তায় বিনিদ্র রাত জাগা সেইসিব রেড ভলান্টিয়ারদের কথা, শ্রমজীবী ক্যান্টিন চালিয়ে, অতিমারি ঠেকাতে প্রয়োজনীয় জিনিস – অক্সিজেন সিলিন্ডার, ওষুধ, খাবারদাবার – যারা সরবরাহ করেছেন নিরবচ্ছিন্নভাবে; পৃথিবী ক্রমশ সুস্থ হবে এই আশায়।

মতাদর্শের দ্বৈরথ



আপাত অর্থের বিচারে মৃত্যুর প্রসঙ্গে হেগেলের দ্বন্দ্বমূলক ভাববাদ ও কার্ল মার্ক্সের দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ – এই দুটো মতাদর্শের ভিত্তিতে প্রেক্ষিতে ইঙ্গমার বার্গম্যানের ‘সেভেন্থ সিল’ ও লুই বুনুয়েলের ‘নাজারিন’ ছবিদুটিকে বিচার করা যেতে পারে। তাছাড়া নান্দনিকতার নিরিখে ছবিদুটিকে যথাক্রমে ‘শিল্পের জন্য শিল্প’ ও ‘জীবনের জন্য শিল্প’ – এভাবে-ও বিচার করা যেতে পারে। কিন্তু আরও তলিয়ে দেখলে মতাদর্শ এক্ষেত্রে ঠিক সেই অর্থে মতবাদ নয়, ঘরানা। দ্বৈরথ বা সংঘাতও তাই মতাদর্শের নয়, বরং দুটো ভিন্ন ঘরানার।

শিল্পের ধাক্কায় জীবন না পাল্টাক, জীবনের ধাক্কায় শিল্প বদলে যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় যে আমূল পরিবর্তন আনে, তার প্রভাবে শিল্প হিসেবে চলচ্চিত্রের খোলনলচে পাল্টে যায়। ইতালিতে – সেই ইতালি যে দেশে ত্রয়োদশ শতকে শুরু হয়েছিল নবজাগরণ – জন্ম নেয় এক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চলচ্চিত্র আন্দোলন, ‘ইতালীয় নব্যবাস্তববাদ’। নবজাগরণের মতোই নব্যবাস্তববাদ ক্রমশ ইতালির হাত ধরে ছড়িয়ে পড়ে গোটা মহাদেশে। বিশ শতকের বিশ্ব চলচ্চিত্রে এই নব্যবাস্তববাদী আন্দোলনকে ত্রয়োদশ শতাব্দীর নবজাগরণের সঙ্গে তুলনা করে ‘দ্বিতীয় নবজাগরণ’ বা ‘চলচ্চিত্রের নবজাগরণ’ বললে অত্যুক্তি হবে না।

চলচ্চিত্রের এই নবজাগরণ থেকে ফিনিক্স পাখির মতো ডানা ঝাপটে উঠে আসে দুটি ঘরানা, তাদের সংঘাত। প্রথম ঘরানা – যার নেতৃত্বে ইঙ্গমার বার্গম্যান, আকিরা কুরোসাওয়া, আন্দ্রে তার্কভস্কি, আব্বাস কিয়েরোস্তামি, ও (কিছুটা) সত্যজিৎ রায় – জীবনের নানা উত্থান-পতন কিংবা নানাবিধ সমস্যাকে তুলে ধরে, ফুটিয়ে তোলে জীবনদর্শনের স্তরবিন্যাস। পক্ষান্তরে দ্বিতীয় ঘরানা – যার পথিকৃৎ লুই বুনুয়েল, আন্দ্রেসেজ ওয়াজদা, মোহসেন মকমলবাফ – জীবনের তথা সমাজের অসহনীয় বাস্তবকে তুলে ধরে। মনের গহীন কোণে যা এক গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করে।

‘নাজারিন’-এর অতিমারি ও অতিমারি সঞ্জাত মৃত্যুমিছিল এমনই এক গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করে। সে মৃত্যুর কাছে মানুষ অসহায় আত্মসমর্পণ করে না। তাই হয়তো প্রলেপ দেওয়ার পরিবর্তে ক্ষতের গভীরতা আরো বাড়িয়ে দেয়। কারণ অতিমারি নিয়ন্ত্রণ ‘নাজারিন’-এর বিষয়বস্তু হলেও অতিমারি র উৎস অনুসন্ধান ‘নাজারিন’-এর বিষয়বস্তু নয়। এখানেই ‘নাজারিন’ ও ‘সেভেন্থ সিল’ ছবিদুটির কৃতিত্ব। অতিমারি যে কীভাবে মানুষের জীবন পাল্টে দেয়, আয়ু কমে যাওয়ার ভয় ধরিয়ে দেয়, নীরব হিংস্রতায় দিনের পর দিন এক রক্তপাতহীন গণহত্যার জন্য প্রায় সমগ্র মানবজাতিকে নিজের মতো তৈরি করে নেয় ‘সেভেন্থ সিল’ ও ‘নাজারিন’ সেই হিংস্রতাকে-ই পরম মমতায় এক ক্ষতবিক্ষত বাস্তব হিসেবে তুলে ধরে। আমরা যে সত্যিই বড় একা, বড় নিঃসঙ্গ – অতিমারির (কি কোভিড, কি প্লেগ) এই সারসত্য দিনের শেষে এই দুটি কালোত্তীর্ণ ছবির-ই মূলমন্ত্র। এখানেই এরা অনন্য। স্বতন্ত্র।

তথ্যসূত্র
১। যন্ত্রণার উত্তরাধিকার, অনুষঙ্গ/অনুবাদ: পরিমল ভট্টাচার্য, অবভাস, ২০১০, পৃষ্ঠা- ৬০
২। ওই, পৃষ্ঠা-৯৮

Copyright © 2021 - 2022 Shramajeebee Bhasha. All Rights Reserved.