বামপন্থা ও গণতন্ত্রের কথোপকথন

[বিশ্ব]

[বিশ্ব]

উত্তর নয়, পথ দেখাচ্ছে দক্ষিণ গোলার্ধ

উত্তর নয়, পথ দেখাচ্ছে দক্ষিণ গোলার্ধ

বসন্ত মুখোপাধ্যায়

photo

আমেরিকা ও ব্রিটেন, শ্রীলঙ্কা ও উরুগুয়ে -চার মহাদেশের চারটি দেশের নির্বাচনের ফলাফল যদি বিশ্লেষণ করা যায়, তাহলে বর্তমান বিশ্বের রাজনৈতিক প্রকবণতার একটা ছবি উঠে আসে। এই প্রবণতা একমুখী নয়, বরং একেবারে বিপরীতমুখী। বিষয়টার তাৎপর্য খুঁটিয়ে বিশ্লেষণ করার মতো।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ট্রাম্প

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কথাই ধরা যাক। ডেমোক্র্যাটদের হারিয়ে এবার প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি পৃথিবীকে কী ধরনের অর্থনীতি ও রাজনীতি উপহার দিতে চলেছেন, তা এখনও স্পষ্ট হয়নি। তবে ট্রাম্প তাঁর নিজস্ব ভোটব্যাঙ্ক, শহর, মফসসল ও গ্রামীণ শ্বেতাঙ্গদের ভোট তো পেয়েছেনই। তার ওপর তিনি ডেমোক্র্যাটদের যারা আদি ভোটব্যাঙ্ক, সেই কৃষ্ণাঙ্গ, লাটিনো, আরব আমেরিকান, অভিভাসী -সব অংশের ভোটেই এবার থাবা বসিয়েছেন। অর্থাৎ ট্রাম্পের উত্থানে রিপাবলিকান সমর্থরাই নন, ডেমোক্র্যাট ভোটারদের একাংশও সমর্থন করেছেন। ডেমোক্র্যাটদের ওপর তাদের একাংশ সমর্থকদের মোহভঙ্গ হয়েছে। কিন্তু কেন? এর মূল উত্তর রয়েছে অর্থনীতিতে।
প্রথমত, দেশের দুই তৃতীয়াংশ বা ৭৬ শতাংশ ভোটার জানিয়েছেন, দেশের অর্থনীতি বেহাল। বেকারি কম হওয়া সত্ত্বেও লোকের মত এমনটাই। মুদ্রাস্ফীতি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের লাগামছাড়া দাম। বাইডেনের আমলে গত পাঁচ বছরে আমেরিকায় মুদিখানার দোকান থেকে গাড়ি বিমা-সব কিছুর দাম বেড়েছে এবং দাম সাধারণ লোকের নাগালের বাইরে চলে গেছে। ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি জিনিসের দাম কমাতে ব্যবস্থা নেবেন। নয়া উদারবাদী অর্থনীতির অনিবার্য পরিণতিতে আমেরিকার সান বেল্ট ও রাস্ট বেন্ট থেকে চাকরিগুলো উধাও হয়ে গেছে। সস্তার বিদেশি মাল আমেরিকার বাজার ছেয়ে ফেলেছে ও ফেলবে। কোণঠাসা অবস্থায় পড়ে চাকরি ফিরিয়ে আনব এবং চড়া শুল্ক বসিয়ে চীনকে ঠেকাব, ট্রাম্পের এই ভুয়ো প্রতিশ্রুতিতে ভোটাররা বিশ্বাস করতে চেয়েছেন। ট্রাম্পের তুরুপের অন্যতম তাস ছিল অভিবাসী সমস্যা। বিদেশের লোকেরা এসে আমেরিকার চাকরিগুলো দখল করে নেওয়াই সঙ্কটের মূল, এই ভ্রান্ত ধারণা ট্রাম্প অন্য সব দক্ষিণপন্থী নেতাদের মতো ভালই বোঝাতে পেরেছেন। এছাড়া যুদ্ধবাজ বাইডেনকে ক্ষমা করেননি আরব-আমেরিকানরা। সব মিলিয়ে, দেখা যাচ্ছে, মূলত বাইডেন আমলের অর্থনৈতিক সঙ্কট থেকে মুক্তির আশায় লোকে ট্রাম্প দক্ষিণপন্থী জেনেও তাঁকে ভোট দিয়েছেন। অর্থনীতি ভাল অবস্থায় থাকলে লোকে এতটা বেপরোয়া হতো না। তখন তারা ভাবনাচিন্তা করার সুযোগ পেতেন।

লেবার, স্টারমার ও ব্রিটেন

এবার ব্রিটেনে ভোটের সময় মানুষ ১৪ বছরের কনজারভেটিভ শাসনের অবসান চেয়েছেন। কনজারভেটিভদের আমলে মানুষের জীবনধারনের খরচ ক্রমশ বেড়েছে। বিদেশ থেকে অভিবাসী আসা বেড়েছে। আরও বেহাল হয়েছে শিক্ষা ও এনএইচএস-এর স্বাস্থ্য পরিষেবা। এবং বেহাল হয়েছে পরিবহণ ব্যবস্থা। ২০০৮ সালের সঙ্কটের পর ডেভিড ক্যামেরনের কনজারভেটিভ সরকার এনএইচএস, শিক্ষা এবং পরিবহণ ক্ষেত্রের বিলগ্নিকরণ করে কিছু পরিষেবা বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার ফলে পরিষেবা বেহাল হয়েছে এবং ভোগান্তি বেড়েছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার পর ব্রিটেনের জিডিপি কমেছে ২ থেকে ৩ শতাংশ। বেড়েছে বেকারি। কমেছে মজুরি। অর্থনীতি বেহাল হলে কোমরের বেল্ট আরও শক্তে করে বাঁধুন, ১৪ বছর কনজারভেটিভদের এই পরামর্শ শোনার পর এবার তা ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন ব্রিটেনের ভোটাররা। তাঁরা ঘটি উল্টে দিয়ে ক্ষমতায় এনেছেন লেবার দলকে। লেবার বলেছিল, তারা পরিবর্তন করবে। কিন্তু এখনও কোনও ক্ষেত্রেই নীতির তেমন কোনও পরিবর্তন দেখা যায়নি। রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে দেদার সাহায্য আগের মতোই করে যাচ্ছে স্টারমারের ব্রিটেন। সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে তেমন কোনও বড় পদক্ষেপই করেনি। বরং, কনজারভেটিভদের নয়া উদারবাদী অর্থনীতিই মোটের ওপর চালিয়ে যাচ্ছে লেবার। তাই স্টারমাররের লেবারকে বলা হচ্ছে লেবারের জামা পরা কনজারভেটিভ। এর মানে লোকে ভোট দিয়ে বদল চাইলেও নয়া উদারবাদী অর্থনীতির ধারক ডিপ স্টেট ব্রিটেনে জনতার রায়কে কার্যত খারিজ করে দিচ্ছে।

জেভিপি, দিসানায়েক ও শ্রীলঙ্কা

নয়া উদারবাদী অর্থনীতি ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কাকে কোথায় নিয়ে গিয়ে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল, সেকথা গোটা বিশ্ব জানে। শাসক রাজাপক্ষে ধনীদের বিপুল পরিমাণে করছাড় দিয়েছিলেন। খামখেয়ালি সিদ্ধান্তে রাসায়নিক সার আমদানি বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দেশের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা ছিল না। বিদেশি মুদ্রার ভাঁড়ার তলানিতে ঠেকেছিল। কোভিড অতিমারির প্রভাব ও জনবিরোধী আর্থিক নীতির জেরে দেউলিয়া ঘোষণার দোরগোড়ায় পৌঁছেছিল শ্রীলঙ্কা। অমিল হয়েছিল নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। মিলছিল না জ্বালানি ও রান্নার গ্যাস। মূলত বিশ্বব্যাঙ্ক ও আইএমএফের ঋণ ফাঁদ থেকে আর বেরোতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। এসবের প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন শ্রীলঙ্কার মানুষ। দখল করে নেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ। গণঅভ্যুত্থানের জেরে দেশ ছাড়েন রাজাপক্ষে।
পরে সংসদীয় ভোটে প্রেসিডেন্ট হন রানিল বিক্রমসিংহে। তবে রানিলের ক্ষমতা ছিল না শ্রীলঙ্কাকে এই সঙ্কট থেকে উদ্ধার করার। যারা রাস্তার বিদ্রোহে সামিল হয়েছিলেন তাঁরা ঘরে ফিরে গেলেও ভোলেননি নিজেদের দুর্দশার কথা। ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করে সব অবিচারের জবাব দিয়েছেন তাঁরা ২০২৪এর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ও পার্লামেন্টের ভোটে। এবার শ্রীলঙ্কায় তৈরি হয়েছে ইতিহাস। শ্রীলঙ্কায় নির্ধারিকভাবে বামপন্থীদেরকে বেছে নিয়েছেন সেখানকার ভোটাররা।
সরকারি হিসাব বলছে, পার্লামেন্টের নির্বাচনে দিসানায়েকের জেভিপির নেতৃত্বাধীন এনপিপি জোট পেয়েছে সংসদের দুই তৃতীয়াংশ গরিষ্ঠতা। জেতা আসনের সংখ্যা ১৫৯। প্রাপ্ত ভোটের হার ৬২ শতাংশ। এমনকী তামিল অধ্যুষিত জাফনাতেও গরিষ্ঠতা পেয়েছে এনপিপি। অথচ এর আগের নির্বাচনে এনপিপি পেয়েছিল মাত্র ৩টি আসন ও ৩.৮৪ শতাংশ ভোট। এবার তাদের ভোট বেড়েছে ৫৭.৭২ শতাংশ। প্রাক্তন শাসক মাহিন্দা রাজপক্ষের দল গত নির্বাচনে পেয়েছিল ৫৯ শতাংশ ভোট ও ১৪৫ আসন। এবার তা কমে হয়েছে যথাক্রমে ৩.১৪ শতাংশ ও ৩। নয়া উদারবাদী অর্থনীতির বিরুদ্ধে কী বিপুল প্রতিবাদ করেছেন শ্রীলঙ্কার মানুষ, এবারের ভোটের ফল থেকেই তা স্পষ্ট। এর আগে এবছরেরই সেপ্টেম্বর মাসে সেদেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন জেভিপি নেতৃত্বাধীন এনপিপি জোটের প্রার্থী দিসানায়েকে। তিনি পেয়েছিলেন প্রায় ৫৬ শতাংশ ভোট। হারিয়েছিলেন এসজেবির সাজিথা প্রেমদাসা ও ইউএনপির রানিল বিক্রমসিংহকে। আসলে তখনই বোঝা গিয়েছিল, পার্লামেন্ট নির্বাচনে ইতিহাস হতে চলেছে শ্রীলঙ্কায়।
এই জয় শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে টেকটনিক শিফট। কারণ একদা জাতীয় রাজনীতির এক কোনায় পড়ে থাকা জনতা বিমুক্তি পেরুমনা (জেভিপি) তার জোট সঙ্গীদের নিয়ে শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে কেন্দ্রীয় ভূমিকায় উঠে এল। অথচ এই দলটি আগে কখনই ক্ষমতায় আসেনি। লক্ষ্যণীয় হল, এই দলটি পরিচালিত হয় কমিউনিস্ট মতাদর্শে এবং তারা সাধারণ মানুষের দাবি ও অধিকারের কথা বলে। এক কথায়, নয়া উদারবাদী অর্থনীতির জেরে সৃষ্টি হওয়া সঙ্কট থেকে বেরোতে এর ইতিবাচক ভূমিকা নিলেন তৃতীয় বিশ্বের দেশ শ্রীলঙ্কার মানুষ। সঙ্কট মোচনের আশায় তাঁরা বেছে নিলেন বামপন্থাকে। এবং বর্জন করলেন নয়া উদারবাদী রাজনীতিক ও দলগুলিকে। অথচ একই ধরনের সঙ্কট থাকা সত্ত্বেও আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ব্রিটেনের ভোটারদের মধ্যে এমন রাডিক্যাল চেতনার প্রকাশ দেখিনি।

ইয়ামানডু ওরসি, ব্রড ফ্রন্ট ও উরুগুয়ে

এবার উরুগুয়ের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিতেছেন ব্রড ফ্রন্টের প্রার্থী ইয়ামানডু ওরসি। সোশাল ডেমোক্রেসি, ডেমোক্রেটিক সোশালজম ও কমিউনিজমের মতাদর্শ অনুসরণ করে ব্রড ফ্রন্ট। এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ওরসির ব্রড ফ্রন্ট পেয়েছে ৫২ শতাংশ ভোট। উল্টোদিকে ন্যাশনাল রিপাবলিকান কোয়ালিশনের প্রার্থী অ্যালভারো ডেলগোডো পেয়েছেন ৪৮ শতাংশ ভোট। যেহেতু লাতিন আমেরিকার দেশগুলিতে খুব কম ব্যবধানে ভোটের ফল নির্ধারিত হয়, তাই ওরসির ক্ষেত্রেও তেমনটাই ঘটেছে।
২০০৪ সালে উরুগুয়ের রাজনীতিতে একটা বড়সড় পরিবর্তন হয়েছিল। সেবার ট্যাবারে ভারকোয়েজের নেতৃত্বে ব্রড ফ্রন্ট একগুচ্ছ প্রগতিশীল সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মসূচির জেরে নির্বাচনে জয়ী হয়। সেই সরকার সামাজিক কল্যাণমূলক কর্মসূচি চালু করে, ট্যাক্স ও পেনশন সংস্কার করে, আর্থিক নীতির সংস্কার করে, নতুন স্বাস্থ্য পরিষেবা চালু করে, ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি করে। এই ধরনের কর্মসূচির জেরে ভারকোয়েজের সরকার, পরে হোসে পেপে মুজিকা সরকার এবং তারও পরে ভারকোয়েজের দ্বিতীয় দফার সরকার ২০০৫ থেকে ২০২০ পর্যন্ত টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় ছিল।
ব্রড ফ্রন্ট সফলভাবে নগদ ট্রান্সফার কর্মসূচি চালু করেছিল। এবং সাামাজিক সহযোগিতার পরিমাণ বাড়িয়েছিল। ২০০৪ সালে উরুগুয়ের ৪০ শতাংশের বেশি মানুষ দারিদ্র সীমার নীচে ছিলেন। পরে ব্রড ফ্রন্ট সরকার বছরে বছরে নতুন নতুন নগদ ট্রান্সফার কর্মসূচি নেওয়ায়, তার আওতায় চলে আসেন দেশের ৩০ শতাংশের বেশি মানুষ। গোটা লাতিন আমেরিকায় নগদ ট্রান্সফার কর্মসূচির আওতায় সবচেয়ে বেশি লোককে আনা হয়েছিল উরুগুয়েতেই। এছাড়া ওই সরকার চালু করেছিল জাতীয় সংহত স্বাস্থ্য পরিষেবা, যার আওতায় আনা হয়েছিল দেশের গরিবদের। এই সব কল্যাণমূলক পদক্ষেপের জেরে ২০১৯ সালে দেশে দারিদ্র সীমার নীচে থাকা লোকের সংখ্যা কমে আসে ৮.৮ শতাংশ। এসবেরই প্রতিফলন ঘটেছিল পর পর তিনটি নির্বাচনে।
এরপর ২০২০ সালে পালাবদলে ক্ষমতায় আসে প্রেসিডেন্ট দেলগোডোর সরকার। তারা ২০২১ ও ২০২২ সালে সামাজিক খাতে খরচ ছাঁটাই করে। আর্থিক ব্যয়সংকোচনের নীতি চালু করে। সরকারি খরচ কমায়। এসবই করা হয়েছিল আইএমএফের পরামর্শে। একইসঙ্গে অবসরের বয়স ৬৫ করায় আরও বেশি কর্মসংকোচনের পরিস্থিতি তৈরি হয়। প্রকৃত মজুরি কমে যায়। কোভিড অতিমারির সময়কার সামাজিক সহায়তা প্রকল্পগুলি দ্রুত প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এমনকি নগদ ট্রান্সফারেও কাটছাঁট করা হয়। আইএমএফ নির্দেশিত এই সব নয়া উদারবাদী সংস্কারের কারণে জনজীবনে সঙ্কট তৈরি হয় এবং দেলগোডো সরকারের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ে। ইয়ামন্ডু ওরসি এবারের নির্বাচনে ব্রন্ড ফ্রন্টের পুরনো নীতিগুলিকে ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দেন। নয়া উদারবাদী আর্থিক কর্মসূচির বিপরীতে জনকল্যাণের কর্মসূচি রূপায়নের প্রতিশ্রুতির জেরে এবার নির্বাচনে ফের ক্ষমতায় ফিরেছে ব্রড ফ্রন্ট।
কয়েকটি পর্যবেক্ষণ

ওপরের চারটি দেশের নির্বাচনে তিনটি প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। মার্কিন ভোটাররা সঙ্কট থেকে বেরোতে আঁকড়ে ধরেছেন দক্ষিণপন্থাকে। ব্রিটেনের ভোটাররা নয়া উদারবাদী অর্থনীতির ফাঁস থেকে বেরোতে চাইলেও তাদের রায়কে নিষ্ক্রিয় করে দিচ্ছে ব্রিটেনের ডিপ স্টেট ও নয়া উদারবাদী অর্থনীতির কর্তারা। একই ধরনের স্থিবতাবস্থায় ঘুরপাক খাচ্ছে ফ্রান্সও। কিন্তু প্রথম বিশ্বের কোনও দেশই নয়া উদারবাদের সৃষ্টি করা সঙ্কট থেকে বেরোনোর পথ দেখাতে পারছে না। বিপরীতে শ্রীলঙ্কা ও উরুগুয়ের মানুষ নিজেদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনে বেছে নিয়েছেন বামপন্থীদের, যারা নয়া উদারবাদী অর্থনীতির বিরুদ্ধে দাড়িয়ে বিকল্প অর্থনীতিকে কার্যকর করতে চায়। এই দুই দেশে মানুষের আকাঙ্ক্ষা, চেতনা ও সিদ্ধান্ত অনেক স্পষ্ট। সেকারণেই বলতে হয়, দক্ষিণ গোলার্ধের দেশগুলির সাধারণ মানুষ অনেক বেশি ইতিবাচক ভূমিকা নিচ্ছেন নয়া উদারবাদের বিরোধিতায়। এটাই বর্তমানে বিশ্ব রাজনীতির ভরসার জায়গা।

Copyright © 2021 - 2022 Shramajeebee Bhasha. All Rights Reserved.