বামপন্থা ও গণতন্ত্রের কথোপকথন
[দেশ]
২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচন প্রাক্কালে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদি ছিলেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী পদে আসীন, আমেদাবাদ থেকে সারা দেশে প্রচারে করেছেন - একটি প্রাইভেট জেটে। জেটটির নথিকরণ ছিল কর্ণাবতী গ্রুপের নামে, যা গৌতম আদানির মালিকাধীন একটি কোম্পানি। নির্বাচন কমিশনের কাছে বিজেপি জানায় যে ওই জেটের জন্য ভাড়া দেওয়া হয়েছিল ৭৭.৮৩ কোটি টাকা।
২০১৪ এর নির্বাচনে বিজেপি জয়লাভ করার পর নরেন্দ্র মোদি ২৩ মে দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা দেন প্রধানমন্ত্রী রূপে শপথগ্রহণ করতে, ওই আমেদাবাদ বিমান বন্দর থেকেই – তবে এইবার অন্য একটি বিমানে, যার গায়ে জ্বলজ্বল করছিল একটি নাম – আদানি। আদানির বিজ্ঞাপন দিতে দিতে নরেন্দ্র মোদি দিল্লি যাত্রা করলেন, এই যাত্রার জন্য ভাড়া দিয়েছেন কিনা জানা নেই। তবে আদানির আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার শুরু মোদির দিল্লি প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই।
২০১৪ থেকে ২০১৯ এর পর্বে মোদি অনেক দেশ ঘুরলেন, ভারতের কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক, প্রতিরক্ষা ও সামরিক সম্পর্ক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নত করার উদ্দেশ্য নিয়েক। ২০১৫ থেকে ২০২০ এর মধ্যে মোদি ৫৮টি দেশে গেছেন। তার মধ্যে ১৬টি দেশে মোদির সঙ্গে ভ্রমণ করেছেন শিল্পপতি গৌতম আদানি। ২০১৪তে জাপানে মোদির সফরে আদানি তার লজিস্টিক কোম্পানির জন্য চুক্তি করে এলেন। ২০১৪তেই ব্রিসবেনে জি-২০ সামিটে আদানি কুইন্সল্যাণ্ডে গ্রীনফিল্ড কোল মাইনিং প্রোজেক্টের বরাত পেলেন। ওই মাইনিং প্রোজেক্টের জন্য স্টেট ব্যাঙ্কের চেয়ারপার্সন অরুন্ধতী ভট্টাচার্য সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকার ঋণেরও ব্যবস্থা করে দিলেন সঙ্গে সঙ্গে। অস্ট্রেলিয়ায় ওই মাইনিং প্রকল্পের বিরুদ্ধে ফাটাফাটি বিক্ষোভ হয় পরবর্তীতে।মোদি মালয়েশিয়া গেলেন, ইরাণ গেলেন, আদানি সঙ্গে সঙ্গে গিয়ে দুই জায়গায় সমুদ্রবন্দরের বরাত পেলেন। ২০১৬ সালে মোজাম্বিকে গিয়ে মোদি চুক্তি করলেন মোজাম্বিকে থেকে ভারতে গম আমদানি করা হবে, আদানি পোর্ট সেই গম ভারতে পৌঁছাবে। ২০১৮তে ওমানে আদানি পোর্ট নানা বরাত পায়। এতো গেল আদানির পোর্ট ও লজিস্টিক এর ব্যবসার কথা। প্রতিরক্ষার ধুয়ো তুলে মোদি বিভিন্ন উন্নত দেশে অস্ত্রশস্ত্র জোগাড়ে ঘুরেছেন, সফরসঙ্গী হিসাবে আদানি এবং আম্বানি পেয়েছে সেই সব দেশের টেকনোলজি ব্যবহার করে ভারতে অস্ত্র উৎপাদনের বরাত, যা প্রায়শই ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ নামে চালানো হয়। মোদি গেছেন সুইডেনে, সিঙ্গল-ইঞ্জিন ফাইটার বিমানের বরাত পেয়েছে আদানি। অনিল আম্বানির কোম্পানি ‘রিলায়েন্স ডিফেন্স অ্যান্ড এরোস্পেস’ও হেভি দাঁও মেরেছিল সুইডেনে, Saab AB কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য ১০০০ কোটি টাকার আনআর্মড এরিয়াল ভেহিকেল তৈরির বরাত পেলেন তিনি। ফ্রান্সে কুখ্যাত রাফাল চুক্তির সময় অনিল আম্বানি কি করে রাফাল যুদ্ধবিমান প্রস্তুতির উৎপাদনের পার্টনার হয়ে গেল, সরকারি অনুগ্রহ ছাড়া ‘রিলায়েন্স ডিফেন্স অ্যান্ড এরোস্পেস’এর মত আনকোরা নতুন কোম্পানি এ সোনার সুযোগ পাওয়া সম্ভব কি? ২০১৬তে ইজরায়েল সফরে আদানির এরো ডিফেন্স সিস্টেমস অ্যান্ড টেকনোলজির সঙ্গে ইজরায়েলি সংস্থা Elbit-ISTAR এর সঙ্গে আনম্যানড এয়ারক্র্যাফট সিস্টেম তৈরির চুক্তি হয়ে গেল দিব্যি। রাশিয়া ও আমেরিকার সফরে অবশ্য ডিলগুলির ফসল ঘরে তুলেছেন মুকেশ আম্বানি। শক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রে মোদির বাংলাদেশ সফরে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির বরাত পান আদানি। হিন্ডেনবার্গ কেলেঙ্কারির পরে সেই চুক্তি সম্ভবত বাতিল করতে চলেছে বাংলাদেশ।
গত বছর শ্রীলঙ্কায় গণঅভ্যুত্থানে টালমাটাল রাজাপক্ষের শাসনকালে এক অদ্ভুত বিতর্কের সূচনা হয়েছিল। সাইলন ইলেক্ট্রিসিটি বোর্ডের চেয়ারম্যান ফাঁস করেন যে শ্রীলঙ্কার মান্নার জেলায় পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণের ভার আদানিকে দেওয়া হয়েছে মোদির তদবিরে। আদানির হয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর লজ্জাহীন তদ্বির করার খবরে ঢিঢি পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ ভারতে। বাংলার প্রথম শ্রেণীর একটি সংবাদপত্রেও এখবর ছাপা হয়নি।
১৬টি সফরে আদানি ১৩টি চুক্তি সফল ভাবে স্বাক্ষর করে, আম্বানিরা ৫টি। এতে সন্দেহ নেই মোদি গৌতম আদানিকে একটু বেশিই ভালবাসেন। শোনা যাচ্ছে শিবসেনার ভাঙ্গনে বিদ্রোহী একনাথ শিন্ডের সমর্থনে বিধায়কদের কিনতে পুঁজি জুগিয়েছেন আদানি - মুম্বইয়ের ক্ষমতা সমীকরণে আম্বানিদের আধিপত্যে ভাগ বসাতে বিজেপি আদানি একসঙ্গে কৌশল নিয়েছে।
আনন্দবাজার পত্রিকায় টি এন নাইনান লিখছেন “একটি হিসাব থেকে জানা যাচ্ছে, গৌতম আদানির সংস্থাগুলি “ভারতের বৃহত্তম বন্দরগুলির বেশ কিছুকে পরিচালনা করে… দেশের ৩০ শতাংশ শস্য রাখার গুদাম তাদের পরিচালনাধীন, তারাই দেশের শক্তি সরবরাহের এক পঞ্চমাংশ নিয়ন্ত্রণ করে, দেশের বাণিজ্যিক বিমান পরিষেবার এক চতুর্থাংশ এদেরই নিয়ন্ত্রণাধীন এবং সেই সঙ্গে দেশের মোট সিমেন্ট উৎপাদনের এক পঞ্চমাংশও তারাই করে থাকে। সিঙ্গাপুরের এক সংস্থার সঙ্গে তাদের যৌথ উদ্যোগকে ভারতের বৃহত্তম খাদ্য উৎপাদক সংস্থা বলে মনে করা হয়…”। আদানিদের প্রথম বন্দর তৈরি হয় গুজরাটের মুন্দ্রায়, দেশের সর্ববৃহৎ বেসরকারি সমুদ্রবন্দর, মোদির মুখ্যমন্ত্রীত্বকালে। গুজরাত সরকার বন্দরের জন্য বিপুল জমি নামেমাত্র মূল্যে দেয় আদানিকে। ২০১২-১৩ সালের ক্যাগের রিপোর্টে পরিষ্কার উল্লেখ আছে যে গুজরাট আদানি পোর্ট লিমিটেড রাজ্য সরকারের অধীন গুজরাট মেরিটাইম বোর্ডের থেকে অবৈধ সুবিধা পেয়েছে। আবার দেশের বাণিজ্যিক বিমান পরিষেবার এক চতুর্থাংশ নিয়ন্ত্রণ করা পিছনে ঐতিহাসিক দুর্নীতি রয়েছে। মোটামুটি ২০১৭ থেকে বাণিজ্যিক বিমান পরিষেবার ব্যবসায় ঢোকার চেষ্টা করে কয়েক বছরের মধ্যে পিপিপি মডেলে চালানো দেশের আটটির মধ্যে সাতটির দায়িত্ব পেয়েছে আদানি রাতারাতি – আদানির এই ব্যবসা চালানোর কোনও অভিজ্ঞতা ছিল না আগে। কিভাবে সরকারি নিয়মাবলী লঙ্ঘন করে গোটা ব্যাপারটি হয়েছে, এ নিয়ে পরঞ্জয় গুহ ঠাকুরতার বিস্তারিত লিখেছেন। (https://paranjoy.in/article/how-adani-will-become-india%E2%80%99s-largest-private-airport-operator)। হিন্ডেনবার্গের পর গত সাত তারিখে তেলেঙ্গানা স্টেট রিনিউএবেল এনার্জি কর্পোরেশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান ওয়াইএসআর টুইটার হ্যান্ডেল থেকে একটি টুইট করেন। সেখানে লেখা হয়েছে ২০২০এর ২ জুলাই সিবিআই জিকেভি মুম্বাই এয়ারপোর্ট ম্যানেজমেন্ট ও জিকেভি কোম্পানির মালিকের বিরুদ্ধে এফআইআর করে। ইডি ১৮ জুলাই জিকেভির মুম্বাই অফিসে রেইড করে। ২০২০ এর ৩১ আগস্ট জিকেভি কোম্পানি মুম্বাই বিমানবন্দরের রক্ষণাবেক্ষণের দ্বায়িত্ব আদানিদের হাতে তুলে দেয়। সমুদ্রবন্দরের দখলের ক্ষেত্রেও এরকম সরকারি পেয়াদার সাহায্য নিয়েছেন আদানি, ২০১৮ এর ১০ অক্টোবর আইটি ডিপার্টমেন্টের রেইড হয় কৃষ্ণপট্টনম ও নভযুগা পোর্টের অফিসে। ২০২০এর পর দুটি পোর্টের দখল নিয়েছে আদানি। টি এন নাইনান আদানির সিমেন্টের সাম্রাজ্যের কথা লিখেছেন, কিন্তু কিভাবে সেই সাম্রাজ্য দখল হল তার ইঙ্গিত আছে ওয়াইএসআর এর টুইটে। ২০২০এর ১০ ডিসেম্বর কম্পিটিশন কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া অভিযান চালায় এসিসি, অম্বুজা, আল্ট্রাটেক সিমেন্ট কোম্পানিগুলির অফিসে। ২০২২এর অক্টোবরে এসিসি, অম্বুজার মালিক হয় আদানি। অদ্ভুতভাবে সিবিআই, ইডি, আইটি ডিপার্মেন্ট, সিবিআই ইত্যাদি কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির অভিযান মোদির রাজনৈতিক বিরোধীদের উপরেও চলেছে। বলা যায়, আদানির প্রতিযোগী কোম্পানিগুলির উপর এই কৌশল ফলপ্রসূ হওয়ায় রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও রেইডের পরীক্ষানিরিক্ষা চলেছে। মোদি আদানির জন্য যে ভাবে লড়েছেন তা প্রশংসনীয়। ২০০২ সালে গুজরাটে গণহত্যার পরে নরেন্দ্র মোদি, যাকে গুজরাতের কসাই বলে অভিহিত করা হয়েছিল, ঘরে বাইরে যথেষ্ট বিপাকে পড়েছিলেন। এমনকি কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রির মঞ্চেও নরেন্দ্র মোদিকে গুজরাট গণহত্যার জন্য ভর্ৎসনা করা হয়। আদানি সেই সময় থেকে মোদির জন্য ব্যাট ধরেছিলেন। কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিকে পাশ কাটিয়ে আলাদা শিল্পপতিদের জোট তৈরি করা, ২০০৩ থেকে ভাইব্রান্ট গুজরাট নামের শিল্প সম্মেলনের আয়োজন করার পিছনে আদানির ভূমিকা ছিল প্রধান। মোদিকে বাজি ধরে আদানির জুয়াখেলা সফল হয়। ২০১৪ থেকে আদানির বিশ্বের তৃতীয় ধনীতম ব্যক্তিতে উত্তরণ।
শিল্পপতিদের উত্থানের পিছনে বিভিন্ন রাজনৈতিক গোষ্ঠী/ব্যক্তি/দেশনায়ক/একনায়কদের সমর্থন থাকেই। তাহলে মোদি ও আদানির যোগসূত্র নিয়ে সর্বস্তরে বিরোধিতা কেন? আমাদের মাথা ব্যাথা কেন? দুই ভাবে এর ব্যাখ্যা করা যায়। প্রথমত, প্রতিযোগিতামূলক ধনতন্ত্রে এই ধরনের বিশেষ সরকারি সুবিধাপ্রাপ্ত শিল্পগোষ্ঠীর উপস্থিতিকে অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর দেখা হয়, আদানি-আম্বানির ওলিগোপলি নিয়ে প্রবল বিরোধিতা রয়েছে শিল্পমহলে। আদানির উত্থানকে Chaebol এর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে (Chaebol, দক্ষিণ কোরিয়ায় পারিবারিক বাণিজ্যগোষ্ঠী যারা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতার নিয়ন্ত্রক), রাশিয়ান মাফিয়া শিল্পপতি যাদের উত্থান সোভিয়েত রাশিয়ার পতনের পর হয়েছিল - তাদের সঙ্গে হয়েছে, এমনকি আদানিকে ভারতীয় রকফেলারও বলা হয়েছে। আদানি-আম্বানি প্রতিযোগিতামূলক ধনতন্ত্রের ভাল বিজ্ঞাপন নয়।
কিন্তু আমরা যে অবস্থান থেকে আদানির সমালোচনা করছি সেটা সম্পূর্ণ দেশের খেটে খাওয়া মানুষ, শ্রমিক, কৃষক, মধ্যবিত্ত, ছোট ব্যবস্যায়ী ও ছোট শিল্প-উৎপাদকদের স্বার্থের প্রেক্ষিতে। আদানির ফুলে ফেঁপে ওঠা ব্যবসার জন্য, বিভিন্ন মার্জার ও অ্যাকুজিশনের জন্য মূলধনের জোগাড় হয়েছে এসবিআই, এলআইসি ও অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের থেকে, হাজার হাজার কোটি টাকা যা অধিকাংশই ব্যাড লোন রূপে চিহ্নিত। অর্থাৎ সেই ঋণের টাকা ব্যাঙ্কগুলিকে শোধ করার সম্ভাবনা কম। সেই হাজার হাজার কোটি টাকা ভারতবর্ষের মানুষের রক্ত-ঘাম-জল করে সঞ্চিত। সাধারণ মানুষ ব্যাঙ্ক থেকে একটি টাকাও ঋণ পায় না যদি না সেই এক টাকাও ফিরত দেওয়ার গ্যারেন্টি দিতে পারেন। আদানি দুই লক্ষ কোটির বেশি ঋণ পেয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্ক থেকে। ২০১৩ সালে ভারতবর্ষে ছয় কোটির মত MSME (Micro, Small and Medium Enterprises) ছিল, ভারতের অর্থনীতির চালিকাশক্তি এইগুলি। মোদি সরকারের আদানি-আম্বানিকে প্রশয় দেবার নীতি আদতে MSME গুলিকে ধ্বংসের মুখে ঠেলেছে। কোভিড পরবর্তী সময়ে বিপুল সংখ্যক MSME অস্বিত্ব রক্ষার সংকটে লড়ছে, ঋণ পেতে ও শোধ করতে তাদের নাভিশ্বাস উঠেছে। আর মোদি সরকার বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠীর ঋণ মুছে দেওয়ার কাজে নির্লজ্জ, এসবিআই সেই সব ঋণগ্রহীতাদের নাম উল্লেখ করতে ক্রমাগত অস্বীকার করে যাচ্ছে যাদের ঋণের পরিমাণ ১০০ কোটির উপরে।
হিমাচল প্রদেশের ৭০০০ ট্রাক ড্রাইভার আদানির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে। আদানি ওখানকার দুটি সিমেন্ট কারখানা বন্ধ করে রেখেছিলেন সেই সময়ে, তার দাবি ছিল ট্রাকে পণ্য পরিবহনের খরচ ৫০ শতাংশ কমাতে হবে, সবার বেতন অর্ধেক করতে হবে। ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে আদানি ওই সমস্যার ‘অ্যামিকেবেল সমাধান’ হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কারখানা চালু করেছেন, পণ্য পরিবহনের দর ১০-১২ শতাংশ কমিয়ে। নিরুপায় ট্রাক চালকরা ওই মজুরি হ্রাস মেনে নিয়ে আবার কাজে যোগ দিয়েছেন। ৫০ শতাংশের চেয়ে ১২ শতাংশ হ্রাস পাওয়া আন্দোলনের আংশিক জয় তো বটেই। শ্রমিকরা বলছেন, হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টের ফলেই একটা সম্ভব হল। আমাদের দেশের দুর্ভাগা ট্রেড ইউনিয়নগুলির দুরবস্থা খানিক আন্দাজ করা যায় শ্রমিকদের এই বক্তব্য থেকে – শ্রমিকও জানে তাদের আংশিক দাবি আদায় হচ্ছে পুঁজিবাদের আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের ফলে। কি বিচিত্র এই দেশ।