বামপন্থা ও গণতন্ত্রের কথোপকথন
[দেশ]
শ্রমজীবী ভাষা, ১৬ জুন, ২০২২— আমরা ১৯৬২র ভারত-চীন যুদ্ধ, ১৯৬৫-র ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ, ১৯৭১-এর ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ও বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৯৯-এর কারগিলে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ এসব পার করে এসেছি। এই সব যুদ্ধ কালে ভারতীয় সমাজের হিন্দু অংশ চীনেপাড়ার চীনেদের বা পার্কসার্কাস-মেটিয়াবুরুজ-হাওড়ার মুসলমানদের প্রতি ঘৃণায় আবিষ্ট হননি। দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধও ভারতে বসবাসকারী নাগরিকদের মধ্যে বিভাজন সৃস্টি করতে সক্ষম হয়নি। ভারত সরকার বা পশ্চিমবঙ্গ সরকার যুদ্ধবিরোধিতার করার জন্য বামপন্থীদের জেলে ভরেছে, কিন্তু ঘৃণা-বিদ্বেষের বিষবাষ্পে সংখ্যাগুরু নাগরিকদের হৃদয় বিষাক্ত করে তুলতে সক্ষম হয়নি রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের প্রচারকরা। অবশ্যই ১৯৯৯ এর কারগিল যুদ্ধের সময়েও কেন্দ্রে অটল বিহারী বাজপেয়ী সরকার সমাসীন ছিল, তবুও এদেশের সংখ্যাগুরু হিন্দুদের ততটা মুসলিম বিদ্বেষী করা যায়নি। ইতিমধ্যে ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলা হয়েছে, “গরব সে বোলো হাম হিন্দু হায়” শ্লোগানে উত্তর প্দেশ, বিহার, মধ্যপ্রদেশ গুজরাট ভরিয়ে দেওযা হয়েছে। কিন্তু ১৯৯৯-এর পরেই মোদি সাহেবকে ২০০১ সালে গুজরাটের গদিতে বসিয়ে দেওয়া হল। ২০০২ সালের গোড়ায় স্বাধীন ভারতের সব থেকে ভয়াবহ গুজরাট দাঙ্গা পরিকল্পিত ভাবে ঘটানো হল, সুপরিকল্পিত গোধরা নিধনকে হাতিয়ার করে। মোদি সাহেবকে হিন্দু হৃদয়ে প্রতিষ্ঠিত করা হল, পরিত্রাতা হিসেবে। গুজরাটি শিল্পপতিরা মোদি সাহেবকে হাত ভরে আশীর্বাদ করল। মোদি সাহেবও তাঁদের। এর মধ্যে আদানি সাহেব গুজরাট বন্দরের ইজারা পেলেন। বহু গুজরাটি ব্যবসায়ী মোদি সাহেবকে ভারত অধীশ্বর হিসেবে দেখার জন্য দীর্ঘকালীন পরিকল্পনা করলেন বলে। তাদের অনেকেই হয়তো এখন দেশ ছেড়েছেন, ঋণ জালিয়াতির দায়ে। মাঝের দশ বছর কংগ্রেসের শাসনের পরে ভারতত্রাতা হিসেবে মোদি সাহেব অধিষ্ঠিত হলেন সিংহাসনে। মূলত: অত্যন্ত সুপরিকল্পিত সংখ্যালঘু বিদ্বেষের উপরে ভর করেই ক্ষমতার গদিতে উঠলেন মোদি সাহেব।
সেই মাহেন্দ্রক্ষণের ৮ বছর কেটে গেছে। কংগ্রসের অপশাসনের সঙ্গে যা যা যুক্ত ছিল, তার প্রতিটি ক্ষেত্রে মোদি সাহেবের সরকার পূর্বতন সরকারের থেকে অনেক নিকৃষ্ট অবস্থানে নিয়ে গেছে দেশকে। মূল্যস্ফীতি, বেকারি, দারিদ্র, গণতন্ত্রহীনতা, ভঙ্গুর আইনশৃঙ্খলা, পুলিশি অত্যাচার, মানবাধিকার ধ্বংস এর প্রতিটি সূচকেই দেশ নিম্নগামী। তবুও ভারতীয় জনতা পার্টি রাজ্য রাজ্য সরকার গড়ছে, অনেক ক্ষেত্রে বিধায়ক কিনেও, কর্পোরেট পুঁজিপতিদের সরবরাহ করা অর্থে। যে সমস্ত কর্মসূচি, যেমন নোট বাতিল করে কালো টাকা উদ্ধার বা আধার দিয়ে জালিয়াতি রোধ, নিয়ে তারা গর্ব করে তার প্রত্যেকটিতেই ভয়াবহ ব্যর্থতা তাদের। তবুও জনমানসে তার ছাপ পড়ে না। কেন? কারণ সংখ্যাগুরুর মনে সংখ্যালঘুর প্রতি ঘৃণার বিষ ঢুকিয়ে দিতে আরএসএস-বিজেপি বহুলাংশে সফল হচ্ছে। ক্রমাগত সংখ্যালঘু মুসলিমদের জীবনযাত্রাকে আক্রমণ করা হয়েছে। গরুর মাংস রাখার মিথ্যে অভিযোগে উত্তরপ্রদেশের দাঁদরিতে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ আকলাখ হত্যা থেকে শুরু হয়েছিল, যার বিচার শুরু হতে সাড়ে পাঁচ বছর লেগেছে। এর পরে হররোজ মুসলিমদের উপরে অত্যাচার বেড়েছে। একদিকে মারধর, হত্যা অন্যদিকে কোভিড কালে তবলিঘি জামাতের জমায়েতকে কেন্দ্র করে ‘কোরোনা জিহাদ’ বলে তাঁদের দায়ী করা কোভিড সংক্রামক হিসেবে। রটনাগুলি মিথ্যা প্রমানিত হলেও রটনাকারীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়া। এসবই চলেছে।
ভারতীয় মুসলমানদের বেঁচে থাকাকেই দু:সহ করে তোলা হয়েছে। ২০২০ সালে “গোলি মারো শালোকো” শ্লোগানের পরে দিল্লি দাঙ্গা। পরে যারা আক্রান্ত তাদেরই গ্রেফতার, দাঙ্গার দায়ে। এখনো তাঁরা জেলের ভিতরে। এই সেদিন তাঁদের মসজিদের সামনে রামনবমীর, হনুমান জয়ন্তীর মিছিল নিয়ে গিয়ে তাঁদের গালাগালি দিয়ে গন্ডগোল পাকানোর পরে তাঁদের আস্তানা, মসজিদের গেটকে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল। সিএএ এনআরসি করে তাঁদের বেনাগরিক করার চক্রান্ত করা হল। দেশের একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগুরু রাজ্য কাশ্মীরের ক্ষেত্রে ৩৭০ ধারা লোপ করে সংবিধানকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জম্মু-কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে রূপান্তর করা হল। মুসলিমদের দেখিয়ে দেওয়া হল হিন্দুত্বের ক্ষমতা। দেশের সর্বোচ্চ আদালত সিএএ বা ৩৭০ লোপের সাংবিধানিক বৈধতা বিষয়ে নিশ্চুপ। ওদিকে সবরিমালা রায়ের পুনর্বিবেচনার কথায় তারা রাজি। সর্বোচ্চ আদালত যুক্তি নয়, বিশ্বাসের উপর ভর করে রায় দিল বাবরি মসজিদের জমিতে মন্দির তৈরির; সেই রায়ে বলা হল মসজিদ ভাঙা ছিল বেআইনি অপরাধমূলক কাজ। কিন্তু আদালতে কোনও অপরাধীর সাজা হল না। বোঝা গেল, বেআইনি ভাবে মসজিদ ভাঙা হলেও যে উদ্দেশ্যে তা ভাঙা হয়েছিল তা সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক অনুমোদিত। কেবল তাই নয় সর্বোচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণ ও আইন নস্যাত করে জ্ঞানবাপী মসজিদে সমীক্ষা শুরু হল এবং সেকাজেও সিলমোহর লাগালো সর্বোচ্চ আদালত। অনায়াসে রটানো গেল যে সেখানে শিবলিঙ্গ পাওয়া গেছে যদিও সমীক্ষায় প্রাপ্ত তথ্য আদালতের কাছে গোপনে থাকা উচিৎ। সেটি শিবলিঙ্গ না ফোয়ারা এই বিতর্কেই নুপুর শর্মার কুৎসিত উক্তি।
রাজ্যে রাজ্যে মুসলিমবিরোধী আইন করা চলছে। মুসলিম তরুণদের প্রেম করার অধিকারও খর্বিত। তাঁরা হিন্দু তরুণীদের সঙ্গে মেলামেশা করলে বা তেমন কাউকে বিবাহ করতে চাইলে ‘লাভ জিহাদ’এর আইন জেলে পাঠাতে তৎপর। মুসলমানরা সরকারি চাকুরি পরীক্ষায় কৃতকার্য হলে ‘সিভিল সার্ভিস জিহাদ’ রটনা। পার্কে নামাজ পড়ায় বাধা। এতাবৎ কাল চলা হালাল মাংসের বিরুদ্ধে আপত্তি। মন্দিরের উৎসবে মুসলমানদের কেনাবেচায় নিষেধাজ্ঞা। দেশের আনাচে কানাচে যত্রতত্র ফুটপাথে সরকারি জমিতে রাম, কৃষ্ণ, শনি, হনুমান মন্দির তৈরি করা চলছে; অন্যদিকে মুসলমানদের মসজিদকে বেআইনি নির্মাণ বলে প্রচার, শ্রমজীবী মুসলমানদের দোকানপাটকে বুলডোজার দিয়ে ধুলিসাৎ করা।
এসবই কিন্তু করা হয়েছে হচ্ছে সংখ্যাগুরু জনসমষ্টির সম্মুখে, সংখ্যাগুরুর কোনও প্রতিবাদ ছাড়াই, অনেক ক্ষেত্রে তাদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সমর্থনে। নাৎসি জার্মানীতেও যখন ইহুদিদের উপরে অত্যাচার চলেছিল, সংখ্যাগুরু জার্মান ‘আর্য’ তাঁদের আর্যত্বে গর্বিত হয়ে সেই অত্যাচারের বিরুদ্ধে রা কাটেনি। মনে রাখা দরকার, সেই ইহুদিরাও আইনের উপর, সংবিধানের উপর ভরসা করেছিল, না হলে পাঁচ লক্ষ ইহুদি অত অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালে হিটলারের পক্ষে তা যথেষ্ট সমস্যার হতো, জার্মান সংখ্যাগরিষ্ঠ খ্রিষ্টানদেরও জীবন সঙ্কটময় হতো না।। সেটা ইহুদিরা করেনি বলেই তাঁদের অতি সহজে নিকেশ করা গিয়েছিল। জার্মান সংখ্যাগরিষ্ঠদের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে সহজে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। তারাও হিটলারের নাৎসি বাহিনীর হত্যাকান্ডের সহযোগী ছিল, নীরব থেকে।
দেশের সংখ্যাগুরুরাও ভারতীয় মুসলমানদের উপরে যে পরিকল্পিত অত্যাচার হচ্ছে তার সক্রিয় বিরোধিতা না করার দায়ে দোষী। এতদিন যে মুসলমানদের উপরে অত্যাচার হচ্ছে, তাঁদের রুটি রুজি পোশাক খাদ্য বাসস্থান উপাসনাস্থল কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, তাঁদের আতঙ্কিত করা হচ্ছে সেটা হিন্দু সংখ্যাগুরুর ক্ষেত্রে ঘটলে কেমন লাগত তা তাঁরা ভাবতেও চাইছে না। অথবা মুসলমানদের উপরে অত্যাচারে তারা মর্ষকামী আনন্দে উদ্বেল। মুসলমানদের উপরে অত্যাচারে সংখ্যাগুরুর এই নিস্পৃহতা বা মদত, পুলিশ, মানবাধিকার কমিশন, নারী কমিশন, নিম্ন আদালত থেকে উচ্চতম আদালতের সর্বত্র সাম্প্রদায়িক শক্তির প্রাধান্য, বামপন্থী দলগুলি ও রাষ্ট্রীয় জনতা দলের মত আরো একটি দুটি দল ছাড়া সমস্ত বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে সাম্প্রদায়িক ঝোঁক এসব দেশের কুড়ি কোটি মুসলমানকে ভাবতে শিখিয়েছে এদেশে তাঁরা ব্রাত্য। কিন্তু তাঁরা বা তাঁদের পূর্বজরা এদেশের বহুত্বকে মেনে নিয়েই দেশে থেকে গিয়েছিল। আজ তাঁরা ঠাই পাবে কোথায়? এই ‘ঘরেও নহে পরেও নহে’ অবস্থা চিন্তিত মুসলমানদের নিরাপত্তাহীনতার দিকে ঠেলে দিয়েছে। এদেশে তাঁদের প্রান্তিক থেকে প্রান্তিকতর করে তুলছে প্রতিদিন।
হিন্দু সংখ্যাগুরুদের স্বঘোষিত প্রতিনিধিত্বকারী আরএসএস-বিজেপি দেশজ মুসলমানদের কোনঠাসা করতে করতে উল্লসিত হয়ে মুসলিম সত্বার প্রতীক, যাঁর উপরে মুসলমানদের ধার্মিক অস্তিত্ব সার্বিক নির্ভরশীল সেই নবীকে নিয়েও পর্দায় অশ্লীল ইঙ্গিত করেছে। বিজেপির মুখপাত্র তা করা সত্বেও পুলিশ প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। যে দিল্লি পুলিশ বা বিজেপি শাসিত রাজ্যের পুলিশ কার্টুন আঁকার দায়ে গ্রেফতার করে, সেই পুলিশ এতদিনেও নুপুর শর্মা বা নবীন জিন্দালকে গ্রেফতার করেনি। আবারো জানিয়ে দেওয়া হয়েছে নবীকে অপমান করাও বিজেপির পক্ষে ন্যায়সঙ্গত।
এক্ষেত্রেও উচিৎ ছিল সংখ্যাগুরু হিন্দুদের রুখে দাঁড়ানোর। তা হয়নি। ফলে মুসলমানরা বুঝেছে নিজেদেরটা নিজেদের বুঝে নিতে হবে। না হলে জার্মানির ইহুদিদের মত তাদের এক এক করে নিকেশ করা হবে। তাঁরা সংগঠিত হবে এটাই স্বাভাবিক। তাতে কতটা আরএসএস-বিজেপির সুবিধে হবে তা অবান্তর। সেটা দেখার দায় দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া মুসলমানদের নয়। যে দেশের সংখ্যাগুরুরা কুড়ি কোটি অপর ধর্মের মানুষের উপরে রাষ্ট্র ও সরকার প্রণোদিত অত্যাচারের বিরুদ্ধে স্বর না তুলে নিস্পৃহ থাকে সেখানে ওই কুড়ি কোটির অবিলম্বে জোট বাঁধা প্রয়োজন, জোট বেঁধে রুখে দাঁড়ানো দরকার, এটা মুসলমানদের অনুভবে এসেছে। ওই অনুভবকে পাথেয় করবেই কোনও না কোনও শক্তি, সু অথবা কু।
গত কয়েকদিন ধরে দেশজোড়া যে বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেছে মুসলমান জনসমষ্টি তা ওই জোট বেঁধে সংখ্যাগুরু সাম্প্রদায়িকতাকে মোকাবিলা করার আকাঙ্খা। বহুক্ষেত্রেই ওই বিক্ষোভে গুন্ডা বাহিনী যোগ দিতে পারে, নাও পারে। কোনও ধরণের গুন্ডাদের যোগসাজশ ছাড়াই আন্দোলনকারীরা ভাঙচুর করতে পারে। তেমন ভাঙচুর অতীতে হয়নি এমনটা নয়। বিজেপি তৃণমূল সিপিআইএম করেনি এমনটাও নয়। ফলে ভাঙচুর হয়েছে বলেই আন্দোলনকারীরা দাঙ্গাবাজ একথা বলা সম্পূর্ণ যুক্তিহীন। মুসলমানদের লড়াইটা যে পর্যায়ে পৌঁছেছে সেটিকে আত্মরক্ষার ও অস্তিত্বরক্ষার সংগ্রাম বলা যেতে পারে। মনে হচ্ছে গত ৮ বছর ধরে ক্রমান্বয়ে আক্রমণের ফলে তাঁদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। প্রশাসন থেকে শুরু করে বিচার ব্যবস্থা পর্যন্ত কোথাও যখন যথাযথ বিচার পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছেনা তখন প্রত্যাঘাতের কথাই হয়তো বা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
সঙ্ঘ পরিবার ও বিজেপিও তেমনটাই চায়। দেশ বা দেশের মানুষকে নিয়ে তারা ভাবে না। তারা চায় নিরঙ্কুশ রাজত্ব। রাজাদের শৌর্য বীর্যের গৌরবগাথাতেই হিন্দুত্বের উপাসকদের আকর্ষণ। আদতে তারা রাজতন্ত্রের সমর্থক, তাই নিত্য তারা রাণা প্রতাপ, শিবাজী, পৃথ্বীরাজ, চোল, চালুক্যদের বীরগাথা হাজির করে। তাদের সাম্প্রদায়িকতার জন্য যদি দেশজোড়া দাঙ্গা লাগে, গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় তাদের কিছুই যায় আসে না। মনে রাখা দরকার, সাধারণ সংখ্যাগুরু হিন্দুরা কিন্তু তাতে ভয়ানক ক্ষতিগ্রস্থ হবে। দেশ ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
এরাজ্যে, হাওড়ার ধূলাগড়, পাঁচলা, সলপ অঞ্চলে দুতিন দিন ধরে যে গন্ডগোলের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তার মধ্য দিয়ে এরাজ্যে বিজেপি কিছুটা জমি ফিরে পেল। লেনিনের সেই অমোঘ বাক্য, “হু স্ট্যান্ডস টু গেইন”কে অনুসরণ করে বলা যায়, নুপুর শর্মার নবীকে অপমান থেকে শুরু করে হাওড়া-বেথুয়াডহরিতে ভাঙচুর সবটার পিছনেই আরএসএস-এর হাত রয়েছে। কিন্তু এরাজ্যে হাওড়া বা বেথুয়ায় যে গন্ডগোল হল তাকে থামাতে রাজ্য সরকারের অনীহা ছিল কেন বোঝা গেল না। প্রথমে গন্ডগোল ভাঙচুর না থামিয়ে পরে ২০০-২৫০ জনকে গ্রেফতার করা হল কেন? এটা কি রাজনৈতিক ফয়দা লোটার জন্য? হতে পারে। গন্ডগোলের পরিকল্পনা না করলেও গন্ডগোল থেকে মুনাফা করার পরিকল্পনাও ভোট সর্বস্ব ক্ষমতালোভী শাসকরা করে থাকে।