বামপন্থা ও গণতন্ত্রের কথোপকথন
[দেশ]
পুরো দস্তুর যুদ্ধ কখনো দেখিনি। জ্ঞান হওয়া ইস্তক শুনে আসছি পাকিস্তান আমাদের দেশের শত্রু। ছোটবেলাতে তেমনটাই বিশ্বাস করতাম। ওই সময়েই ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধ হয়। তখন ব্ল্যাক আউট হতো। যেহেতু পাকিস্তানের বর্ডার কলকাতার খুব কাছেই ছিল তাই রাস্তার আলোগুলোতে অর্ধেক কালো করা থাকত। তখনো ইসলামোফোবিয়া ছড়ানো হয়েছিল। আমাদের ঢাকুরিয়ায় ছত্রী সৈন্য নামার গল্প রটেছিল। লুঙ্গি পরা পুরোনো কাগজ ক্রেতাদের ধরে মারাও হয়েছিল। তবে শেষমেষ কলকাতায় বোমাও পড়েনি। আমরাও কোনও যুদ্ধের সম্মুখীন হইনি। এর পরে ১৯৭১-এ ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হল। তবে সে যুদ্ধ শুরু হতে না হতেই শেষ। জেনারেল নিয়াজি লাখ খানেক সেনা নিয়ে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। ভারত সেই যুদ্ধ সম্পূর্ণ জিতলেও কোনও এলাকা দখল করেনি। কেবল বাংলাদেশ তৈরি করার কাজটা করেছিল। পাকিস্তান সেনাবাহিনী বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যে তাণ্ডব করেছিল তাতে কোনও বাইরের শক্তিশালী সেনা যুদ্ধ করলে পাক-সেনার পরাজয় নিশ্চিত ছিল। এর পরে ১৯৯৯ সালে কারগিলে যুদ্ধ হল। এত সীমিত যুদ্ধ যে দু’পক্ষের জেতা ছাড়া উপায় থাকে না। অতিসম্প্রতি পহেলগামে ২২ জনের নৃশংস হত্যার পরেও যে সীমিত লড়াই হল, তাতেও নাকি দুই দেশই জিতেছে। যে যুদ্ধ দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ার সময় শুনেছি, আর পূর্বাশা সিনেমা হলে হকিকৎ দেখতে দেখতে কেঁদেছি সেটাই ছিল জীবনের প্রথম যুদ্ধ বিষয়ে জ্ঞান, চীন-ভারত যুদ্ধ। তখনও শুনেছিলাম, আমাদের দেশ জিতেছে। পরে জেনেছি, এবং অরুণাচল প্রদেশে গিয়ে দেখেও এসেছি, চীন তৎকালিন নেফার বেশ খানিকটা অভ্যন্তরে বমডিলা পর্যন্ত এসে ফেরত চলে গিয়েছিল। কেন গিয়েছিল তখন না বুঝলেও এখন বুঝি। কোনও অঞ্চলের শ্রমজীবী মানুষের সমর্থন ব্যতিরেকে যুদ্ধ করে অঞ্চল দখল করা গেলেও তার উপরে কর্তৃত্ব করা খুবই কঠিন ও ব্যয় সাপেক্ষ।
ভারতীয় হয়ে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের বিরোধিতা করাটাই এখন ‘দেশদ্রোহিতা’ হিসেবে চিহ্নিত হছ্ছে। সাধারণভাবে যুদ্ধের বিরুদ্ধে শান্তির পক্ষে থাকাটা যে সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের কাজ সে বোধটা অন্তর্হিত হয়েছে। কার্যকরী যুদ্ধ বিরোধিতা করতে গেলে যে তা নিজের দেশ যখন যুদ্ধে লিপ্ত তখনই করতে হয়, রাশিয়া-ইউক্রেন বা গাজায় ইজরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নিরাপদ দূরত্বে থেকে তা করা সহজ। নিজের দেশ যখন যুদ্ধে লিপ্ত হয় তখন তার সিদ্ধান্ত নেয় সেই দেশের শাসক, যুদ্ধ উন্মাদনা তৈরি করা হয়, যুদ্ধ ব্যতিরেকে প্রতিপক্ষকে ‘শিক্ষা’ দেওয়ার অন্য কোনও রাস্তা নেই এই ভাবনা বিবিধ প্রক্রিয়ায় জনসাধারণের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হয়, যুদ্ধ বিরোধীদের দেশ বিরোধী বলে দেগে দেওয়া হয়। এক উগ্র-জাতীয়তাবাদ ছড়িয়ে পড়ে। এবারের পাকিস্তান-ভারত প্রায়-যুদ্ধ পরিস্থিতিতেও তেমনটাই ঘটল। পহেলগামে যে বা যারা কেবল হিন্দু পর্যটকদের নৃশংসভাবে হত্যা করার মদতদাতা ছিল তাদের হরেক উদ্দেশ্য থাকতে পারে। হয়তো বা দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের সঙ্গে দেশের সর্ববৃহৎ সংখ্যালঘু গোষ্ঠী মুসলমাদের মধ্যে শাসক দল সৃষ্ট বিভাজনকে স্থায়ী ও চওড়া করার ইচ্ছেতেই তা করা হয়েছে, হয়তো বা পাকিস্তানের সেনা প্রধানের ক্রমহ্রাসমান প্রতিপত্তিকে সামাল দিতে বা পাকিস্তানের মধ্যে তুমুল বিদ্রোহকে সামাল দিতে, বা এদেশের একটি বৃহৎ রাজ্যের আগামী নির্বাচনের দিকে চোখ রেখে তা ঘটানো হয়েছে। দুটি দেশের শাসকই এই বিরোধে লাভবান হয়েছে। পাকিস্তানেও আসিম মুনিরের জনপ্রিয়তা বেড়েছে, কারণ পাকিস্তান নাকি এই লড়াই-এ ভারতকে সমুচিত ‘শিক্ষা’ দিয়েছে: অপরদিকে এদেশেও শাসক দল যুদ্ধ নিয়ে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছে, কারণ পাকিস্তানকে হাঁটু মুড়ে যুদ্ধ বিরতির জন্য কাকুতি মিনতি করতে হয়েছে। ফলে মোটের উপর দু’দেশই নিজেদের অভীষ্ট লক্ষে পৌঁছেছে। এদেশে আমাদের মতো কতিপয় যুদ্ধ বিরোধী শান্তির পক্ষে থাকা মানুষজনের মতো পাকিস্তানেও নিশ্চিত কিছু মানুষ আছেন। তাঁরাও সেখানে ‘দেশদ্রোহী’।
‘যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই’ বলাটা কোনওভাবেই অসাংবিধানিক নয়। এই শ্লোগান আমাদের সংবিধানের ১৯(১)(ক) ধারা দ্বারা অনুমোদিত। সমস্যাটা অন্যত্র। এদেশের শাসক দল সংবিধানের নামে শপথ নিয়ে সংবিধান মেনে চলতে নারাজ। তারা শাসন করাটাকেই যুদ্ধ বলে মনে করে, গণতন্ত্রপ্রিয় শান্তিপ্রিয় ধর্মনিরপেক্ষ দেশবাসীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ। সে যে বাহিনীকে দিয়ে শাসনকে বলবৎ রাখতে চায় সেটা দেশের সেনাবহিনী নয়, শাসকের সেনা, যারা ধর্মনিরপেক্ষতা ও শান্তিকে মনে করে তাদের মতাদর্শের শত্রু। যুদ্ধের সময়ে দেশপ্রেমের আতর ছড়িয়ে তাদের বলয়কে বাড়িয়ে ফেলে যে সমস্ত নাগরিক তাদের
মতাদর্শকে সমর্থন করে না তাদেরও দলে টেনে যুদ্ধের বিরুদ্ধে জনমত তৈরিতে সচেষ্ট নাগরিকদের গণধিক্কার, সামাজিক বয়কট, এমনকি গণপিটুনিও দেওয়ার পরিবেশ তৈরি করে। সমস্ত যুক্তিবুদ্ধিকে আচ্ছন্ন করতে যুদ্ধের মত ওষুধ আর কিছুই নেই।
সাম্প্রতিক সঙ্ঘাতও অনুরূপ যুক্তিহীন আনুগত্য ও বোধহীন উন্মাদনা সৃষ্টি করেছে। যুদ্ধের বিরুদ্ধে বললেই শোনা যাচ্ছে, তাহলে কীভাবে সন্ত্রাসবাদ ও এই নির্বিচার হত্যাকে আটকানো যাবে, আমরা কি পড়ে পড়ে মার খাব? দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ কোনও সমাধান হতে পারে না তা এই যুদ্ধ ঘোষণাহীন যুদ্ধ-বিরতিতেই পরিষ্কার। কিন্তু শাসক সৃষ্ট বোধহীন উন্মাদনা যুদ্ধহীন সমাধানে তৃপ্ত নয়। এদেশের শাসক রাজনৈতিক দলটি এবং ওদেশের কর্তৃত্বহীন শাসক দল ও প্রভাবশালী সেনাবাহিনীও সেই উন্মত্ততাকে ব্যবহার করতে আগ্রহী, কারণ তাদের সব অপারগতা, অকর্মণ্যতা তাতে ঢাকা পড়ে। কেউ প্রশ্ন করতেই সাহস করে না যে, পহেলগামের পর্যটকদের কোনও নিরাপত্তা ছিল না কেন, কেন ছিল না ওইরূপ জনপ্রিয় পর্যটনক্ষেত্রে কাশ্মীরে মোতায়েন লক্ষ সামরিক-আধা সামরিক বাহিনীর এক ক্ষুদ্রাংশেরও উপস্থিতি? এসব অপ্রিয় সমস্ত প্রশ্নকেই দেশপ্রেমের আবেগ দিয়ে বিনাশ করা যায়। উপরন্তু যদি যুক্তির প্রশ্ন করা হয় যে, তাহলে কি যুদ্ধ করে সন্ত্রাসবাদ, পুলওয়ামা বা পহেলগামের মত গণহত্যাকে রুখে দেওয়া যাবে? সেখানে কিন্তু যুদ্ধের সমর্থকরা নিশ্চয়তা দিতে নারাজ। আলোচনার মাধ্যমে শান্তির কথা বললে তাঁরা অনুরূপ হত্যাকাণ্ড না ঘটার নিশ্চয়তা চাইছেন, কিন্তু যুদ্ধের মাধ্যমে ব্যবস্থাগ্রহণের ক্ষেত্রে সেই নিশ্চয়তা তাঁরাও দিতে চাইছেন না। ফলে যুদ্ধের মাধ্যমে বদলাতেই যে তাঁদের আগ্রহ তা বলাই বাহুল্য। এই উপমহাদেশে শান্তি মহাশক্তিধরদের কাম্য নয়, তাদের দোসর শাসক দলগুলিরও নয়। তবে পুরো দস্তুর যুদ্ধও তারা চায় না। যুদ্ধের আবহ বজায় থাকলেই অস্ত্র ব্যবসায়ীদের লাভ।
যুদ্ধ ঘোষণা বিহীন যুদ্ধবিরতি ঘোষণার দু’দিন পরে নরেন্দ্র মোদি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে বলেন যে, অপারেশন সিন্দুর এখনো চলছে। তা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই-এ নতুন মানদণ্ড তৈরি করেছে, এক নতুন মাপকাঠি ও নতুন স্বাভাবিকতা (নিউ নর্মাল) স্থাপন করেছে। ওই ভাষণ থেকেই বোঝা যাচ্ছিল যে, তিনি জনগণকে সুরক্ষা বা দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতার নিশ্চয়তার আশ্বাস দিচ্ছেন না; বলতে চাইছেন যে দেশ এখন একটি স্থায়ী যুদ্ধের পরিস্থিতিতে রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি ঘোষণায় হতাশ হয়ে পড়া বিজেপির উগ্র জাতীয়তাবাদী সমর্থকদের সন্তুষ্ট করার জন্যই তো এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হল। আসলে পহেলগাম হামলার পর রাজনৈতিকভাবে যুদ্ধের উত্তেজনা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়ে বিজেপি হয়তো বা অজান্তেই নিজেদেরকে একটি কঠিন অবস্থানে ফেলে দিয়েছিল। হিমাংশী নারওয়ালের সদ্য বিবাহিত স্বামী নৌবাহিনীর অফিসার বিনয় নারওয়ালকে ওই নৃশংস গণহত্যার শিকার হতে হয়েছিল। হিমাংশী কাশ্মীরী ও মুসলমানদের লক্ষ্যবস্তু না করার ও শান্তির আহ্বান জানিয়েছিলেন। তখন তাঁকে বিজেপির গালাগালি শুনতে হয়েছিল। ক্ষমতাসীন দল হিসেবে বিজেপি আক্রমণ প্রতিরোধে ব্যর্থতার দায়িত্ব নেওয়ার অথবা পর্যটন কেন্দ্রগুলো সুরক্ষিত করার ক্ষেত্রে অবহেলার ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেনি। তারা এই হত্যাকাণ্ডকে ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণায় রূপান্তরিত করে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ হবে আর বিজেপি মুসলমানদের লক্ষ্যবস্তু করবে না তাতো হতে পারে না। ভারতের বেশ কিছু জায়গায় মুসলিম ও কাশ্মীরীদের উপর হামলা চালানো হয় এবং ভারত সরকারের সমালোচনাকারীদের গ্রেপ্তার করা হয়। কাশ্মীরে, ‘সন্ত্রাসীদের’ সঙ্গে কোনও ধরণের আত্মীয়তা থাকলেই তেমন ব্যক্তিদের বাড়ি গুড়িয়ে দেওয়া হয়, এবং হাজার হাজার মানুষকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়। পাকিস্তানি পাসপোর্টধারী ব্যক্তিদের নির্বাসিত করা হয়। সিন্ধু জলচুক্তি বাতিল করা হয়।
এরপর, অপারেশন সিন্দুর ঘোষণা করা হয়। ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানি ‘সন্ত্রাসী ঘাটি’গুলিকে ধ্বংস করার ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গে মূলধারার গণমাধ্যমগুলি পাকিস্তানকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করার জন্য উন্মত্ত আহ্বান জানায়। প্রধান টিভি সংবাদমাধ্যমগুলি সম্পূর্ণ মিথ্যাভাবে ঘোষণা করে যে, করাচি বন্দর ধ্বংস হয়ে গেছে এবং ভারতীয় সেনাবাহিনী সীমান্ত লঙ্ঘন করেছে। সেই সমস্ত যুদ্ধের চিৎকার এবং ভুয়া খবর এবং বিজেপির আইটি সেলগুলির উন্মত্ত বার্তাগুলি দেশে চরম যুদ্ধোন্মাদনা তৈরি করে ও বিজেপি এবং যুদ্ধের সমর্থকরা বিশ্বাস করতে শুরু করে যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একটি চূড়ান্ত যুদ্ধ শুরু হয়েছে এবং সেদেশের পতন আসন্ন। সমস্ত সত্য খবরের সূত্র ও সমালোচনামূলক কণ্ঠস্বর দ্রুত বন্ধ করে দেওয়া হয়। ভারত সরকার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম X থেকে ৮,০০০ অ্যাকাউন্ট ব্লক করার অনুরোধ করে।
যখন বিজেপির সমর্থকরা নিশ্চিত ছিল যে, পাকিস্তানের পতন কেবল সময়ের অপেক্ষা, ঠিক তখনই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ও পরে বিদেশমন্ত্রীর হঠাৎ যুদ্ধবিরতি ঘোষণা তাদের অবাক করে দেয়। এই যুদ্ধবিরতিকে মার্কিনী চাপের কাছে নতিস্বীকার হিসেবেই গণ্য করেছিল তারা। মোদীকে তো বিজেপির সমর্থকরা আক্রমণ করতে অপারগ তাই, তারা যুদ্ধবিরতি ঘোষণাকারী বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরির উপর অনলাইন কুৎসিত আক্রমণ চালায়। তাকে বিশ্বাসঘাতক এবং কাপুরুষ বলে গালিগালাজ ও হিংসাত্মক বার্তা ছড়িয়ে পড়ে। তার মেয়েও অনলাইন নির্যাতনের শিকার হয়। এই অনলাইন নির্যাতন এতটাই তীব্র ছিল যে তিনি তার সামাজিক মাধ্যমের উপস্থিতি বন্ধ করে দেন। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে, আমরা তাকে ট্রোল করার জন্য কোনও সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ব্লক করার বা তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা শুনিনি। শান্তির ডাক দেওয়ার সাহস করার জন্য নার্ওয়ালকে নির্যাতন ও অপমানের মুখোমুখি হওয়ার পরেও তাকে রক্ষা করার জন্যও কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রোটেকশন অফ সিভিল রাইটসের প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে যে, ২২ এপ্রিল থেকে ভারতের বিভিন্ন অংশ থেকে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ১৮৪টি ঘৃণ্য অপরাধের খবর পাওয়া গেছে; যার মধ্যে রয়েছে হত্যা, হামলা, ভাঙচুর, ঘৃণ্য বক্তব্য, হুমকি, ভয় দেখানো এবং হয়রানি।
ওদিকে সরকার সংসদ আহ্বানের জন্য বিরোধী দলগুলির আহ্বান উপেক্ষা করছে, যার অর্থ সরকার গণতান্ত্রিক সংলাপ চাইছে না। এদিকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন যে অভিযান শেষ হয়নি, তাই ভারতীয় জনগণকে সম্পূর্ণ অনুগত থাকতে হবে। বিরোধী দলগুলি সরকারের কাছে প্রশ্ন করতে পারবে না। মুসলমানদের প্রতিনিয়ত দেশের প্রতি আনুগত্য প্রমাণ করতে হবে। বাক স্বাধীনতা থাকবে, তবে কেবল তাদের জন্য যারা বিজেপির পক্ষে কথা বলে। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ অনুযায়ী দেশ এখন এক স্থায়ী শত্রু ও স্থায়ী যুদ্ধের মুখোমুখি, আপাতত তা স্থগিত রয়েছে মাত্র। সেই কারণেই ভারতে গণতন্ত্র স্থগিত অবস্থায় রয়েছে।