বামপন্থা ও গণতন্ত্রের কথোপকথন
[রাজ্য]
আমরা ভেবেছিলাম ২০২০র করোনার প্রথম ঢেউ পার করে ফেলতে পারলে আমরা বেঁচে যাব, আমাদের জীবন আবার পুরনো ছন্দে ফিরবে। ঘর বন্দী দশাতে আমরা হাপিয়ে উঠছিলাম; মুখে মাস্ক, হাজার নিয়ম কানুন, উঠতে বসতে নানা নিষেধাজ্ঞা আর একটানা আতঙ্ক। তার উপর তো লেখা পড়া, কাজ কর্ম, রুজি রোজগার সব বিপর্যস্ত। এক দিকে প্রাক করোনা দিনগুলির জন্য আমাদের আকুতি বাড়তেই থাকে, অন্য দিকে ফিরে ফিরে দেখি ইতিহাসের পাতা উল্টে অতীতের একাধিক মহামারির কাহিনি। একটা সময় এসে মনে হলো, আমাদের দুঃসময় বুঝিবা শেষ হলো, কিন্তু না...
২০২১ এর শুরু আত্মতুষ্টি দিয়ে - এক দিকে তা প্রকাশ পায় হরিদ্বারের মহা কুম্ভে লাখ লাখ লোকের কোভিড নিয়মবিধি উপেক্ষা করে জমায়েত হওয়ায়, আর অন্য দিকে কোভিড বিধি তাচ্ছিল্য করে পশ্চিবঙ্গে প্রায় সমস্ত রাজনৈতিক দলের সভা সমাবেশের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচার চালানোয়। তবে অচিরেই আমাদের স্বপ্নভঙ্গ হলো। দেখলাম, অতিমারি তার দাপট শুধু বজায় রেখেছে এমনটাই নয়, আমাদের এই নির্বুদ্ধিতার সুযোগ নিয়ে সে তার দাপট অনেকগুণ বাড়িয়েছে।
পন্ডিতেরা বললেন, এটা নাকি করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। চারিদিকে চোখের পলকে মৃত দেহের স্তূপ জমতে লাগলো। দেখা গেল হাসপাতালে রোগীর স্থানাভাব, শ্মশানে এত শব দাহ করা যাচ্ছে না, শত শত লাশ গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে, আর তার সঙ্গে ভেসে যাচ্ছে মানুষের সযত্নে লালিত আশা, আকাঙ্ক্ষা, স্বপ্ন। উপদ্রবকারী ভাইরাসটির নাম, এবং আমাদের দেশে, তথা ভারতে তার কোন ভ্যারিয়ান্ট-এর প্রাধান্য দেখা যাচ্ছে তা সম্পর্কে আমরা অনেকেই সচেতন হলাম। তবে মুশকিল হলো, অনেক কিছুই তো জানলাম, বুঝলাম, কিন্তু সমস্যাটা থেকে বেরোনোর পথটাই যে খুঁজে পাওয়া গেল না! আমাদের অবস্থা ঠিক যেন অভিমন্যূর মতই অসহায়! তবে না, আমাদের অবস্থা অভিমন্যূর মত হবে না। এ চক্রব্যূহ থেকে আমরা অবশ্যই বেরোবো – আমরা বলতে, সামগ্রিক ভাবে মানব সমাজ।
চক্রব্যূহ থেকে বেরনোর পথ
এতটা জোরের সঙ্গে বললাম, আমরা বেরোবো – কিসের ভিত্তিতে? আত্মবিশ্বাস, না আর কিছু? বলা কঠিন। নানা মুনির নানা মত। কেউ টিকা সম্পর্কে আশাবাদী, বলবেন বাজারের এত ধরনের টিকা এসে গেছে, আমাদের আর ভয়ের কারণ নেই। টিকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াকে তাঁরা তেমন আমল দিতে রাজি নন, ঠিক যেমন টিকার ক্ষেত্রে তোলা অন্যান্য সন্দেহগুলিকে। আর এক দলের মুখে শোনা যায় herd immunity-র কথা। অনেকের মধ্যেই anti-body তৈরি হয়ে যাচ্ছে, তাই বিপদ কমে যাবে। তৃতীয় এক দল বলেন, প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মেই একদিন এই মারণ খেলা থেমে যাবে। যা এক দিন শুরু হয়েছে, তা একদিন নিজের থেকেই তার শক্তি হারাবে – আমরা কিছু করি আর নাই করি, এর ক্ষয় অনিবার্য। কেউ আবার ভরসা রাখবেন নতুন গজিয়ে ওঠা করোনা দেবীর উপর! আমরা ভারতবাসীরা ইতিমধ্যেই মন্দির মসজিদ, মাদুলি তাবিজের ভারে ন্যুব্জ, সেই ভার আরো কিছুটা বাড়িয়ে দিয়ে করোনা দেবী ইতিমধ্যেই নিজের স্থান করে নিয়েছেন। দক্ষিণ ভারতে তামিলনাডুতে রাতারাতি গড়ে উঠেছে সেই দেবীর মন্দির। এ ছাড়াও, যাগযজ্ঞ শুরু হয়েছে বিভিন্ন স্থানে। সে যাই হোক, যে ভাবেই হোক, পন্ডিতদের নানা মতের থেকে এটাই উঠে আসে, আজ নয় কাল আমরা এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাব। চক্রব্যূহ থেকে বেরোনোর পথ খুঁজে পাব।
তার পর...?
চক্রব্যূহ থেকে বেরনোর পর আমাদের অনুভূতি কেমন হবে? দীর্ঘ কারাবাসের পর একজন মানুষ বেরিয়ে এলে অনুভূতি যে রকম হয়, বোধ হয় তেমনটাই হবে। অতীতকে, তথা কোভিড পূর্ববর্তী কালকে মনে হবে পূর্ব জন্ম। দুঃস্বপ্নের মত লাগবে মাঝের কেটে যাওয়া কয়েকটা বছর। আলেয়া। কিন্তু কোনটা? কোভিড কাল, না কি তার আগেরটা? এক ধোঁয়াশার মধ্যে দিয়ে নতুন করে হারিয়ে যাওয়া সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জীবনের হারিয়ে যাওয়া অস্তিত্বকে খুঁজে বেড়াবে শারীরিক ভাবে বেঁচে থাকা, মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত, অর্থনৈতিক ভাবে বিপর্যস্ত মানুষজন।
ব্যাধির প্রকোপ কমলে, কি হারালোর হিসাব হবে নানা দিক থেকে। অর্থনীতিবিদরা তাঁদের মতো করে হিসাব করবেন, দেখবেন অতিমারির ফলে ঘটে যাওয়া বাজারের ধ্বস, আমদানি রপ্তানির ক্ষয়ক্ষতি, বেকারত্বের ঊর্ধ্বমুখী গতি, মানুষের রুজিরুটির সমস্যা। তাঁরা নতুন করে ভারতের বিপন্ন অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার পথ খুঁজবেন, কর্মহীন মানুষের কর্মসংস্থানের বিষয় দুশ্চিন্তা ব্যক্ত করবেন। ইতিহাসবিদ দেখবেন অতীতের মহামারির সঙ্গে তুলনা করে এই অতিমারির মিল-অমিল কোথায়, আর তারই প্রেক্ষিতে সেদিন কি হারিয়েছিলাম আর আজ কি হারালাম। সমাজতাত্বিকের চোখে উঠে আসবে অতিমারির ঝড়ে সমাজের ভাঙ্গাগড়ার ছবি। বিজ্ঞানী জানতে চাইবেন কেন এমন ব্যাধির কবলে আমরা পড়লাম, আগামী দিনে কী প্রতিষেধক আমাদের বাঁচাবে। শিক্ষক কাতর ভাবে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের চিন্তায় বিচলিত থাকবেন। অতিমারি শেষে রণক্লান্ত চিকিৎসক নীরবে চোখের জল মুছবেন, কেন এই মৃত্যু মিছিল আমরা থামাতে পারলাম না? আর, ধ্বংস স্তুপের মধ্যে দাঁড়িয়ে আপামর মানুষ নতুন করে বাঁচার রসদ খুঁজবেন, খুঁজতে তো হবেই, কারণ সেটাই তো প্রকৃতির নিয়ম। চিরকাল মৃত্যুর মধ্যেই লুকিয়ে থাকে জীবনের স্পন্দন...
ধংসস্তুপের নিচে যা হারিয়ে গেল...
বেঁচে থাকা মানুষ ধ্বংসস্তূপের মধ্যে হা্রিয়ে ফেলবে অনেক কিছু। কারো কারো ক্ষেত্রে সব কিছু।
দেখবে,হারিয়ে গেল ছন্দময় জীবনের গতি। ছোট ছোট সুখ দুঃখে গড়া দৈনন্দিন জীবন চোখের সামনে তছনছ হয়ে গেল। পার্কে বেড়াতে যাওয়া, সিনেমা থিয়েটার দেখা, রাস্তায় দাঁড়িয়ে ভাঁড়ের চা খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীর ভবিষ্যত নিয়ে সুগভীর আলোচনায় ব্যস্ত থাকা, চানাচুর ঝাল মুড়ির আড্ডায় মধ্যবিত্তের ফ্রয়েড থেকে চমস্কির মূল্যায়ন করা, পারস্পরিক আদান প্রদানে দিন কাটানো, উৎসব আনন্দে মেতে থাকা, কর্ম ব্যস্ত জীবন, পঠনপাঠনের তাগিদ, সবই কেমন যেন হারিয়ে গেল!
চারি দিকে হাহাকার। ভেঙ্গে পড়ার মুখে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো। হাসপাতালে শয্যা নেই, জীবনদায়ী ঔষধ নেই, অক্সিজেনের ঘাটতি। মৃত্যুর মিছিল! সে মৃত্যু মিছিলে রোগীর পাশাপাশি একের পর এক যুক্ত হয়েছে ডাক্তার স্বাস্থকর্মীর লাশ। তবে শেষোক্তরা তো কোভিড যোদ্ধা, তাই লাশ হয়ে গিয়েও আলাদা সন্মানের অধিকারী। পরিকাঠামোর অভাব তাঁদের এই বেদনাদায়ক মৃত্যুর জন্য যে কতখানি দায়ী সে কথায় আর নাই বা গেলাম, কারণ সে প্রশ্ন তোলা পাপ।
বহু মানুষ হারিয়ে ফেললেন তাঁদের প্রিয়জনদের। অনেক বাড়ি কোভিড কালের স্মৃতি হিসাবে আগামী দিনে একাধিক মৃত্যুর ভার বহন করে চলবে। খুঁজবেন মৃত্যুর অনিবার্যতার মধ্যে অশান্ত মনের শান্তি। মনে পড়ে গেল বুদ্ধের গল্প। শোনা যায় তাঁর কাছে এক ভক্ত রমণী একবার তাঁর মৃত সন্তানকে বাঁচিয়ে তোলার আবেদন করেছিলেন। বুদ্ধ বলেছিলেন, আগে এমন এক বাড়ি থেকে কটা সর্ষে নিয়ে এসো যেখানে মৃত্যু শোক নেই। তারই স্পর্শে তোমার সন্তানকে বাঁচিয়ে তুলবো। আপাতভাবে অতি তুচ্ছ সেই নির্দেশ পালন করতে শিষ্যা ছুটে গিয়েছিলেন গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে, কিন্তু এমন কোনও বাড়ি পান নি যেখানে মৃত্যু ঘটেনি। তিনি সেদিন খালি হাতে বুদ্ধের কাছে ফিরে এসেছিলেন; তিনি তাঁর শিক্ষা পেয়েছিলেন। মৃত্যুর অনিবার্যতা তিনি উপলব্ধি করলেন। হ্যা, মৃত্যু অনিবার্য, কিন্তু সে মৃত্যু কি এত অল্প দিনে এত ভয়ঙ্কর ব্যাপক হতে হবে? এটা তো অনিবার্য নয়!
বহু বেঁচে থাকা মানুষ প্রেতাত্মার মত বেঁচে থাকবেন, ভগ্ন স্বাস্থ্য, কঙ্কালসার দেহ নিয়ে কাল ব্যাধির ছায়ায় জীবনের বাকি দিনগুলি গুনবেন। দেশের দূর্বল স্বাস্থ্য পরিকাঠামো তাঁদের কতটা ভরসা দিতে পারবে, জানি না।
শিক্ষা যেন থমকে গেল। প্রাথমিক স্কুল থেকে শুরু করে উচ্চ শিক্ষা। বছর ঘুরে গেলেও শ্রেণী কক্ষের তালা খোলে নি। অনলাইন ক্লাস কোথাও আছে, কোথাও নেই। কারো নাগালে আছে, কারো নাগালে নেই। যেখানে আছে, সেখানেও ক্রমে ছাত্র ও শিক্ষকের উৎসাহে ভাঁটা দেখা যাচ্ছে। মোদ্দা কথা, কোথাওই অনলাইন ক্লাস শ্রেণী কক্ষের বিকল্প হয়ে উঠতে পারছে না। প্রত্যন্ত এলাকার, প্রান্তিক সমাজের ছেলেমেয়েদের পঠনপাঠন অনেকেরই হয়ত বা চিরতরে থমকে যাবে।
এ সময় কাজ হারালেন বহু মানুষ। সংগঠিত ক্ষেত্রে ব্যাপক কর্ম সংকোচন হলো। হাজার হাজার মানুষের রাতারাতি কাজ চলে গেল। নীচের তলা থেকে উপরের তলায় সর্বত্রই তার ধাক্কা লাগল। অসংঠিত ক্ষেত্রের অবস্থা আরো শোচণীয়। বহু মানুষের রুজির পথ বন্ধ হলো। কারো সাময়িক ভাবে, কারো বা চিরকালের মতো। দূরদূরান্তের কর্মক্ষেত্র থেকে ক্লান্ত পায়ে কর্মচ্যূত অনেকে ঘরে ফিরলেন। কেউ কেউ বা পথেই প্রাণ হারালেন।
এ সঙ্কটে, নিবিড় সম্পর্কের বাঁধন কত সময় মনে হয়েছে বড় ঠুনকো। অসুস্থ মানুষ অনেকেই দেখলেন তাঁদের কোভিড রিপোর্ট আসতে কত অনায়াসে কাছের মানুষজন দূরে সরে গেছে। পুত্রকন্যা অনায়াসে ছেড়ে গেছে কোভিড আক্রান্ত বাবা মাকে, একা মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়তে পরিত্যক্ত হয়েছেন একের পর এক মানুষ। কেউ পথের ধারে, কেউ বা হাসপাতালের বাইরে। ‘নিজের লোক’ ফেলে গেছে প্রিয়জনের মৃতদেহ। মৃত্যুভয় এমনই সর্বগ্রাসী ভয়! এ সব দেখে বারবার মনে হয়েছে, এ পৃথিবীতে সত্যিই তো কেউ কারো নয় - ‘দারাপুত্র পরিবার তুমি কার কে তোমার/ বলে জীব করো না ক্রন্দন’। হতাশা আমাদের ঘিড়ে ধরে। কিন্তু, না, তারই মধ্যে বারবার ফুটে উঠেছে আশার আলো। দিকে দিকে এগিয়ে এসেছে অচেনা, অনাত্মীয় জন, পরিচিতির সমস্ত বেড়া ডিঙ্গিয়ে, অসহায় মানুষের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে ...
সময়ের পথ চেয়ে...
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এ সব কিছু অতিক্রম করে মানুষ উঠে দাঁড়াবে। অতিমারি ক্রমে হয়ে যাবে ‘বর্তমান’ বিভীষিকা থেকে ‘ইতিহাস’। সেই ইতিহাসের শিক্ষা নিয়ে ভেঙ্গে যাওয়া অর্থনীতি, স্বাস্থ্য পরিকাঠামো, শিক্ষা ব্যবস্থা আবার ধীরে ধীরে স্বাভাবিক করতে হবে। শ্রমিক কল কারখানায় যাবে, অফিস আদালতের ব্যস্ততা চোখে পড়বে, ছেলেমেয়েরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণী কক্ষে ফিরবে, মানুষ পরস্পরের হাত ধরবে, কাছে আসবে, উজ্জ্বল আগামী দিনের স্বপ্ন দেখবে। কিন্তু সেই ভবিষ্যৎ গড়তে হলে নিজেদের ভুলভ্রান্তিগুলো মানতে হবে, শুধরাতে হবে; মানতে হবে নানা ক্ষেত্রে দীর্ঘ দিনের পরিকল্পনার ব্যর্থতা। আজকের এই নিদারুণ দুঃসময় আমরা বুঝতে পারছি সরকারি ছত্রছায়ার গুরুত্ব – নাগরিকদের জীবন সুরক্ষিত করার ক্ষেত্রে সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার আবশ্যিকতার কোনও বিকল্প নেই। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শ্রমজীবী মানুষদের সামাজিক সুরক্ষা দেওয়ার যথাযথ দায়িত্ব একমাত্র সরকারই পালন করতে পারে, সে দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলতে পারে না সরকার। এ সব ক্ষেত্রে সঠিক নীতির অভাবে আজ এই অতিমারির ধাক্কায় প্রত্যন্ত অঞ্চলের দরিদ্র পরিবারের বহু শিশু তাদের শৈশব হারাতে বসেছে, তাদের অনেকেরই পঠনপাঠনে হয়তো চিরকালের মত ছেদ পড়ে যাবে, তারা শিশু শ্রমিকে পরিণত হবে, কেউ বা পাচার হবে; অসুরক্ষিত শ্রমিকরা নিরাপত্তাহীন অবস্থায় কাজ হারিয়ে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে ঘরে ফিরতে হয়েছে, অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আছে; প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিকাঠামগত সীমাবদ্ধতায় অতিমারির সময় অনেক রোগীর প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সম্ভব হয় নি । বুঝতে হবে, আমাদের মতো দেশে দরকার একের পর এক সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল নয়, মুষ্ঠিমেয় এলিট ছাত্রছাত্রীদের জন্য ব্যয়বহুল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়; চাই মাটির কাছাকাছি থাকা প্রান্তিক মানুষদের প্রয়োজন মেটানোর রসদ। নজর দিতে হবে প্রান্তিকতম মানুষদের প্রতি, তাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, উপার্জনের চাহিদার দিকে। ভিত শক্ত না হলে ইমারৎ দাঁড়ায় না। আর সেই ভিত শক্ত করতে আনতে হবে পরিকল্পনাকারীদের দৃষ্টিভঙ্গির আমূল পরিবর্তন ও সঠিক পরিকল্পনা। বলাবাহুল্য, ঢেলে সাজাতে হবে অনেক কিছু !