বামপন্থা ও গণতন্ত্রের কথোপকথন

[রাজ্য]

[রাজ্য]

আসন্ন ত্রিপাক্ষিক চুক্তি ও চটকল শ্রমিক

আসন্ন ত্রিপাক্ষিক চুক্তি ও চটকল শ্রমিক

শত্রুঘ্ন কাহার

photo

চটকল ইতিহাসের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছে। স্বাধীনতা উত্তর পর্বে মালিক-শ্রমিক দ্বন্দ্ব সমাধানের জন্য সরকারের মধ্যস্থতায় মিল মালিক ও শ্রমিকদের আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসার উদ্দেশ্যেই এই ত্রিপাক্ষিক আলোচনা সভার সূত্রপাত করেছিল। ১৯৬০ ও ৭০ এর দশকে শ্রমিকদের অধিকার অর্জনের জন্য একের পর এক সংগ্রাম মিল মালিককে ত্রিপাক্ষিক আলোচনার টেবিলে আসতে বাধ্য করে। শ্রমিকদের স্থায়ীকরণ, ইএসআই, পিএফ, গ্রাচ্যুইটি, কাজের সময় নির্ধারণ, বোনাস ইত্যাদির মতো একাধিক অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত হয় এই ত্রিপাক্ষিক আলোচনার টেবিলেই। মূলত বামপন্থীরাই এ বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করে। ১৯৭৭ সালে বামপন্থীদের ক্ষমতায় আসার প্রথম দুই দশক এই ধারা অব্যাহত থাকলেও, মূলত ৯০এর দশক থেকে শ্রমজীবীদের অধিকার আদায়ের অন্যতম হাতিয়ার ত্রিপাক্ষিক চুক্তি ক্রমশ ভোঁতা হতে থাকে। বামপন্থীদের নেতৃত্বে এই পর্বে আন্দোলন প্রায় স্তব্ধ হয়ে যায়, ত্রিপাক্ষিক আলোচনার টেবিলকে একটি আনুষ্ঠানিক আলোচনা সভায় রূপান্তর হয়। এর পর প্রায় প্রত্যেক তিনবছর অন্তর ত্রিপাক্ষিক আলোচনা সংঘটিত হলেও, তা ছিল নিয়ম রক্ষা মাত্র। শ্রমিকদের অবস্থা করুণ থেকে করুণতর হতে শুরু করে, তাদের পূর্বের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত অধিকারও একের পর এক লঙ্ঘিত হয়, মালিকদের অকথ্য শোষণ নেমে আসে। তিন বছর পর পর ত্রিপাক্ষিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হলেও তাদের ওপর নেমে আসা এই সমস্ত আক্রমণের প্রতিবিধান সম্ভব হয়নি মূলত সরকারের সদ্বিচ্ছার অভাবে।
২০১১ সালে পালাবদলের মধ্য দিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে এক অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটে। এক নতুন যুগের হাতছানিতে বাংলার আপামর জনগণের পাশাপাশি চটকল শ্রমজীবীরাও সাড়া দিয়েছিল। তাদের মনে একটা নতুন আশা আকাঙ্ক্ষার জন্ম দেয় মা-মাটি-মানুষের শ্লোগান। কিন্তু পালাবদলের প্রায় ১১ বছর অতিবাহিত হয়েছে অথচ তাদের নতুন যুগ আজও অধরা, তাদের আশা আকাঙ্ক্ষা আজও অসম্পূর্ণ। মা-মাটি-মানুষের সরকারের ক্ষমতায়নের পর দুটি ত্রিপাক্ষিক চুক্তি সম্পন্ন হয়, যথাক্রমে ২০১৫ ও ২০১৯ এ। ২০২২ এর ত্রিপাক্ষিক সমঝোতার জন্য একের পর এক মিটিং অনুষ্ঠিত হলেও তা আজও অমীমাংসিত। ক্ষমতায় আসার প্রায় ৪ বছর পরে সরকার মিল মালিক ও ট্রেড ইউনিয়নগুলিকে নিয়ে আলোচনার টেবিলে বসেছিল। জুট মিলগুলির সমঝোতার মেয়াদ তিন বছর হলেও পরবর্তী ত্রিপাক্ষিক সমঝোতার জন্য আবার ৪ বছর সময় লেগেছিল। শ্রমজীবীদের জীবনজীবিকা সরকারের কাছে কতটা প্রাধান্য পায় তা সহজেই অনুমেয়। লক্ষ্য করার বিষয় হল, এই সমঝোতাগুলির মধ্য দিয়ে শ্রমিকদের বেতনের তেমন কোনও পরিবর্তন ঘটে নি। চটকল শ্রমজীবীদের জীবনের মূল প্রশ্নগুলি অমীমাংসিতই থেকে গিয়েছে, যার প্রতিফলন দেখা যায় ২০২২ সালে সরকার, মিল মালিক তথা ট্রেড ইউনিয়নদের দ্বারা নিযুক্ত অনুসন্ধান কমিটির অনুসন্ধানে।
২০২১ সালের শেষের দিকে বাংলার ট্রেড ইউনিয়নের চাপে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে ওয়াজির নামক এক এডভাইজারি কমিটি নিযুক্ত করা হয় বাংলার চটকল শ্রমজীবীদের হাল-হকিকত অনুসন্ধানের জন্য। এই কাজের জন্য ওয়াজির এডভাইজার কমিটি একটি প্রশ্নমালা প্রস্তুত করে, ইজমার মাধ্যমে প্রায় ৪১টি মিল থেকে ২০০ জন শ্রমিকের উত্তর সংগ্রহ করে।
সমীক্ষায় দেখা যায়, চটকলে কর্মরত শ্রমিকদের গড় বয়স ৪২ বছর। মিলে কর্মরত মহিলা শ্রমিকের সংখ্যা খুবই নগণ্য মাত্র ২.৬১ শতাংশ। সংগৃহীত তথ্য থেকে দেখা যায় ২০০ শ্রমিকের মধ্যে মাত্র ১১ শতাংশ স্থায়ী শ্রমিক, ৬ শতাংশ স্পেশাল বদলী, ১৪ শতাংশ বদলী, ৪৫ শতাংশ নিউ এন্ট্রান্ট, এবং অবশিষ্ট ২৪ শতাংশ অন্যান্য শ্রমিক যেমন কেজুয়াল, টেম্পোরারি, জিরো নম্বর শ্রমিক হিসাবে মিলে কর্মরত।
বেশিরভাগ শ্রমিক বিহার, উত্তরপ্রদেশ, ওড়িশা ও অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে ভাল আয়ের আশায় জুট মিলের কাজে যোগ দিয়েছিল। শ্রমিকদের মধ্যে বেশিরভাগই গড়ে ৫ সদস্যের পরিবার সমেত এখানে বসবাস করে। সমীক্ষায় শ্রমিকদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার কথা উঠে আসে, যেমন স্বল্প বেতন, শ্রমসাধ্য কাজ, কাজ ও থাকার করুণ পরিস্থিতি, কাজের অনিশ্চয়তা এবং পিএফ ও গ্রাচ্যুইটির প্রাপ্য প্রদানে অনিশ্চয়তা ইত্যাদি। এই সমস্যাগুলির মধ্যে স্বল্প বেতন তথা শ্রমসাধ্য কাজ প্রধান সমস্যা হিসাবে চিহ্নিত করা যায়। ৯৫ শতাংশ শ্রমিক মনে করে, তাদের বেতন খুব কম এবং হাতে পাওয়া বেতন পরিবারের ভরণপোষণের জন্য যথেষ্ট নয়। এক্ষেত্রে তাদের আত্মীয়স্বজনের সাহায্যের দরকার পরে। অনেক ক্ষেত্রে বিকল্প কর্মসংস্থানেরও প্রয়োজন পরে। পরিবারের অন্যান্য সদস্য বা মহিলারা কুটির শিল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বিকল্প আয়ে সচেষ্ট থাকে। ৫৬ শতাংশ শ্রমিক মনে করে, তাদের নিদারুণ কর্মভার সহ্য করতে হয়। যদিও মিল কর্তৃপক্ষ ঠিক এর বিপরীত কথা বলে এবং আরও কর্মভার বৃদ্ধির স্বপক্ষে সওয়াল করে। শ্রমিকরা মনে করে, তাদের কাজ ব্যাপক একঘেয়ে এবং কাজের শেষে তারা বিধ্বস্ত হয়ে পরে। কাজের শেষের তাদের ব্যক্তিগত বা সামাজিক দায়িত্ব পালনের শক্তিটুকু অবশিষ্ট থাকে না। এমনকি তারা এতটাই ক্লান্ত হয়ে পরে যে অতিরিক্ত কোনও কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আয় বৃদ্ধির সুযোগটুকু তাদের থাকে না।
তাদের বেতনের একটি নির্দিষ্ট অংশ বীমা রূপে কাঁটা হয় মাসে মাসে যেটি তাদের চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে সাহায্য করে। তবে শ্রমিকদের মধ্যে প্রায় ৫৫ শতাংশ শ্রমিক ইএসআই পরিষেবা গ্রহণকালে একই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়, যেমন- হাসপাতালগুলিতে ব্যাপক ভিড়, দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা, যথোপযুক্ত ওষুধের অপ্রতুলতা, অপর্যাপ্ত চিকিৎসাব্যবস্থা ইত্যাদি। ফলে শ্রমিকরা বাধ্য হয়ে বাইরের ডাক্তার তথা ওষুধের দোকানে চিকিৎসার জন্য যায় যা তাদের চিকিৎসা বাবদ ব্যয় বৃদ্ধি করে, ফলস্বরুপ তাদের স্বল্প বেতনের ওপর চাপ বৃদ্ধি পায়।
সমীক্ষায় কর্মক্ষেত্রের করুণ পরিস্থিতির চিত্র ফুটে উঠেছে। একাধিক মিলের ছাদ ভগ্ন অবস্থায় আছে। বৃষ্টির দিনে জল এই ভগ্ন ছাদ তথা জানলা দিয়ে মিল চত্বরে প্রবেশ করে। এছাড়া সমগ্র মিল পাটের ধুলোয় ভরে থাকে যা ক্রমশ শ্বাসযন্ত্র জনিত রোগে আক্রান্ত করে শ্রমিকদের। এছাড়া মিল অভ্যন্তরে পয়ঃপ্রণালী সংক্রান্ত সমস্যাও শ্রমিকদের জীবনকে প্রভাবিত করে। শ্রমিকদের ব্যবহৃত টয়লেট বা ওয়াশরুম ভীষণ নোংরা এবং দুর্গন্ধযুক্ত। কর্মক্ষেত্রে এই অমানবিক পরিস্থিতির প্রভাব তাদের কর্মজীবনকে আরও দুর্বিষহ করে তোলে।
তাদের বাসস্থানের চিত্রও ফুটে উঠেছে বর্তমান সমীক্ষা থেকে। সমীক্ষাকৃত শ্রমিকদের মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ শ্রমিক মিল কোয়ার্টার এ বসবাস করে। কোয়ার্টারগুলি সেই ব্রিটিশ আমলে তৈরি। মাঝে মাঝে কিছু পুনঃসংস্কার করা হলেও, কোয়ার্টারগুলির সামগ্রিক পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন ঘটে নি। ৮ ফুট বাই ১০ ফুটের ঘরে ৪ থেকে ৫ সদস্যের পরিবার বসবাসের জন্য অনুপযুক্ত। কোয়ার্টার এ পৃথক কোনও রান্নাঘর থাকে না। কোয়ার্টারের নিজের ঘরগুলির সামনে কিছু অংশ ঘিরে বারান্দার মত করে তাতেই রান্নার কাজ চলে, কিন্তু দোতলায় এই সুবিধা থাকে না। এই কোয়ার্টারগুলির সঙ্গে পৃথক কোনও টয়েলেট বা ওয়াশরুমের ব্যবস্থাও নেই। ফলে শ্রমিক তথা শ্রমিক পরিবারের মহিলাদের সুলভ শৌচালয় ব্যবহার করতে হবে, যেগুলি প্রচণ্ড অস্বাস্থ্যকর তথা অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় থাকে। মিল কোয়ার্টার গুলির সংলগ্ন থাকা এই শৌচালয়গুলি থেকে ব্যাপক দুর্গন্ধ সমগ্র লাইন অঞ্চলকে অসহনীয় করে তোলে। প্রত্যেক লাইন অঞ্চলে থাকা কমন জলের ট্যাপ থেকে সমগ্র শ্রমিকরা খাওয়ার জল সংগ্রহ করে।
সমীক্ষাকৃত শ্রমিকদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ শ্রমিক মিল কোয়ার্টার বহির্ভূত পার্শ্ববর্তী বস্তি অঞ্চলে বসবাস করে। এদের মধ্যে প্রায় ৩৩ শতাংশ উক্ত অঞ্চলে জমি ক্রয় করে তাতে পাকা বাড়ি তৈরি করে বসবাস করে। এই বস্তিগুলির ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্যণীয়। অন্যদিকে বাকি ২৭ শতাংশ শ্রমিক ভাড়া বাড়িতে সপরিবারে বসবাস করে। উক্ত অঞ্চলে পৌর পরিষেবা পৌঁছালেও, তাদের দৈনন্দিন জীবন কোয়ার্টার জীবন থেকে খুব একটা ভাল বলা যায় না। ১০ বাই ১০ এর ছোট ঘরে সপরিবারে বসবাস, পৃথক বাথরুমের বা স্নানাগারের ব্যবস্থা না থাকায় ওই ঘরেই স্নানাদির কর্ম সম্পাদন করা হয়ে থাকে। রাস্তার মোড়ে অবস্থিত কমিউনিটি জলের কল থেকে খাওয়ার জল সংগ্রহ করা হয়ে থাকে।
মিলে ব্যাপক অনুপস্থিতির হার লক্ষ্য করা যায়। অনুপস্থিতির জন্য একাধিক কারণ ক্রিয়াশীল যার মধ্যে অসুস্থতা অন্যতম। এছাড়াও উৎসব তথা পারিবারিক অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের অনুপস্থিতির হার বাড়ে। তথাকথিত দেশের (গ্রামের) বাড়িতে ভ্রমণের জন্য বছরের নির্দিষ্ট কিছু দিন কিছু শ্রমিক ছুটি নিয়ে ঘুরতে যান, তবে এই সংখ্যা খুব একটা বেশি নয়। আবার মিলগুলি শ্রমিকদের বিধিবদ্ধ পাওনা শোধ না করায় (যার পরিমাণ বর্তমানে প্রায় ৫০০ কোটি) শ্রমিকরা জুট মিলের কাজে ক্রমশ উৎসাহ হারাচ্ছে। যুব শ্রমিকরা জুট মিলের তুলনায় অন্য কোনও কাজ যেখানে ডেলি রোজে প্রায় ৫০০/৬০০ টাকা পাওয়া যায় সেই কাজের প্রতি আকর্ষিত হচ্ছে। বিধিবদ্ধ পাওনা অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় পুরনো অবসর প্রাপ্ত শ্রমিকরা জুট মিলে কাজের দরুন পাওয়া কোয়ার্টার ছাড়তে চায় না ফলে নতুন শ্রমিকদের জন্য কোয়ার্টার পাওয়া মুশকিল হয়ে পরে। এই সমস্ত কারণে চটকলের কাজ যুব শ্রমজীবীদের আকর্ষিত করতে পারে না।
জুট শ্রমিকদের জীবনে একটি বড় সমস্যা চটকল কর্মজীবনের অনিশ্চয়তা। পাটের অভাব, পাটজাত দ্রব্যের চাহিদা হ্রাস বা মিল মালিকের মনমর্জি মতো মিল বন্ধের আদেশ প্রভৃতির ফলেতাদের কর্মজীবনে প্রায় অনিশ্চয়তা নেমে আসে, যা তাদের জীবন জীবিকার ওপর প্রভাব ফেলে। কর্মজীবনের এই অনিশ্চয়তা তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের দিকে ঠেলে দেয়। পরিবারের ভরণপোষণ তথা নিশ্চিত আয় প্রভৃতি কারণে জুট মিলের স্থায়ী কর্মজীবন থেকে মিল বহির্ভূত অস্থায়ী কর্মজীবন তাদের কাছে বেশি হাতছানি দেয়।
যদিও ওয়াজিরের রিপোর্টে শ্রমিকদের প্রাত্যহিক জীবনে সামগ্রিক খরচের একটি স্পষ্ট চিত্র পাওয়া যায়। সাধারণত চটকল শ্রমিকদের পরিবারে ৫ জন সদস্য থেকে থাকে। তাদের আয়ের প্রায় সিংহভাগ খরচ হয় খাবারের জন্য প্রায় ৫০ থেকে ৫৫ শতাংশ। বাকি বেতনের ১২ থেকে ১৫ শতাংশ খরচ হয় ছেলে মেয়েদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে এবং অবশিষ্ট অংশ বাড়ি ভাড়া, বিদ্যুৎ ভাড়া, কাপড়, ওষুধ ইত্যাদিতে খরচ হয়।
সুতরাং স্বাভাবিকভাবেই দেখা যাচ্ছে যে বাংলার রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হলেও চটকল শ্রমজীবীদের সামগ্রিক জীবনে তেমন কোনও পরিবর্তন সংগঠিত হয় নি। উপরোক্ত সমীক্ষার নিরিখে ১৪ ডিসেম্বর ২০২২ এ পশ্চিমবঙ্গ শ্রমদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে একটি ত্রিপাক্ষিক মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। এই মিটিংএও ট্রেড বামপন্থী ইউনিয়নগুলি, দৈনিক ১০০০ টাকা ন্যূনতম বেতন, গ্রেড স্কেলের সূচনা, শ্রমিকদের অদক্ষ, অর্ধ-দক্ষ, দক্ষ এবং উচ্চ-দক্ষ শ্রেণীতে বিভাজন, ডি এ পয়েন্ট পিছু ২.৫০ টাকা প্রদান, স্থায়ী ও অস্থায়ী শ্রমিকের পূর্বতন শর্ত অনুসারে ৯০ ও ২০ শতাংশ অনুপাত সুনির্দিষ্টকরণ, বকেয়া পিএফ ও গ্রাচ্যুইটি মিটিয়ে দেওয়া, ইএসআই সুবিধার সরলীকরণ, ক্যান্টিন ব্যবস্থা, শ্রমিকদের বসবাসের জন্য কোয়ার্টার গুলির সংখ্যা বৃদ্ধি, বোনাস, বন্ধ মিল খোলার মত ২০টি প্রস্তাব এই মিটিং এ উপস্থাপন করে।
সরকার ও মালিকপক্ষ এমনকি অনুসন্ধানে নিযুক্ত ওয়াজির কমিটিও শ্রমজীবীদের নিদারুণ অভাব অভিযোগের কথা তাদের রিপোর্টে তুলে ধরলেও, এই অভাব অভিযোগ সেই প্রাক উপনিবেশিক যুগ থেকেই চলে আসছে। সরকার বদলেছে কিন্তু তাদের সমস্যার বদল ঘটে নি। আসন্ন ত্রিপাক্ষিক সমঝোতা এই শ্রমজীবীদের উক্ত সমস্যাগুলির সুষ্ঠু সমাধানে প্রয়াসী হবে আশা করা যায়। যদিও পূর্ব অভিজ্ঞতা অন্য কথা বলে।

Copyright © 2021 - 2022 Shramajeebee Bhasha. All Rights Reserved.