বামপন্থা ও গণতন্ত্রের কথোপকথন

[রাজ্য]

[রাজ্য]

প্রান্তিকবর্গের শিক্ষা সম্ভাবনা, সমস্যা ও সমাধান

প্রান্তিকবর্গের শিক্ষা সম্ভাবনা, সমস্যা ও সমাধান

মেচবাহার সেখ

photo

শ্রমজীবী ভাষা, ১৬ মে, ২০২২— ব্রাজিলিয়ান অ্যান্ড্রাগজিস্ট (বয়স্ক শিক্ষাবিদ) পাওলো ফ্রেইরি তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ Pedagogy of the oppressed বইটিতে প্রান্তীয় মানুষের শিক্ষার সম্বন্ধে নানা বিশ্লেষণের মধ্যে একটা অতি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন, তা হল- Culture of Silence অর্থাৎ নীরবতার সংস্কৃতি। মানুষ যেমন নানা সংস্কৃতির বেষ্টনীতে আবদ্ধ থাকেন যা সহজে ছাড়া যায় না তেমনি গরিব মানুষ গরিবী আবহাওয়ায় থাকতে থাকতে ন্যূনতম চাহিদার মধ্যে জীবনকে সীমায়িত করে রাখে। তাদের মধ্যে নতুন চাহিদার জন্ম হয় না। চুপ থাকাটা তাদের মধ্যে সংস্কৃতি হয়ে যায়। এ অবস্থায় ক্রিটিক্যাল চিন্তার প্রত্যাশা করাটা অসম্ভব। এই নীরবতার সংস্কৃতি বজায় রাখার জন্য তিনি তৎকালীন শিক্ষা ব্যবস্থাকেই দায়ী করেছেন। যে ব্যবস্থা প্রান্তীয়জনের কাছে পৌঁছাতে পারে না বা প্রান্তীয় গোষ্ঠী সে সুযোগ গ্রহণ করতে পারে না।
প্রান্তীয়বর্গের শিক্ষার জন্য সাংবিধানিক চৌহদ্দির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ব্যবস্থা ১৯৯৭ এবং ২০০৩ সালে যথাক্রমে শিশু শিক্ষা ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মসূচি নামে দুটি কর্মসূচির অবতারণা করে।
প্রথমটি প্রাথমিক শিক্ষা এবং দ্বিতীয়টি অষ্টম মানের শিক্ষার লক্ষ্যে। নাম যাই হোক না কেন আসলে দুটি কর্মসূচিই মূল ধারার শিক্ষা ব্যবস্থার সমতুল। প্রাথমিক পর্যায় থেকে চলতে শুরু করে ২০০৭ সালের মধ্যে শিশু শিক্ষা কেন্দ্রে সংখ্যা দাঁড়ায় ১৬ হাজারের অধিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা ২ হাজারের কাছে। উভয় প্রতিষ্ঠান মিলে ছাত্র-ছাত্রীর সখ্যা ১২ লক্ষাধিক। যাদের ৮২% তপশিলি জাতি, উপজাতি, সংখ্যালঘু মুসলিম এবং অন্যান্য পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীভুক্ত। যে ৮২% শিক্ষার্থী এই শিক্ষার ছায়াতলে এলো তারা ফ্রেইরের সেই নীরবতার সংস্কৃতিতে বিরাজিত জনগোষ্ঠীর। অধিকাংশই ক্ষেতমজুর, শিল্পশ্রমিক এবং অন্যান্য জীবিকায় যুক্ত। এই দিক থেকে বিচার করলে এই দুই কর্মসূচি ছিল নীরবতার সংস্কৃতি ভাঙ্গার কর্মসূচি। প্রশ্ন হল: এই ৮২% পশ্চাৎপদ গোষ্ঠীর শিশুর অভিভাবকরা হঠাৎ কোন চেতনায় জেগে উঠে শিশুদের বিদ্যালয়ে ঠেলে দিলো? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে শিশু শিক্ষা ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মসূচির উৎপত্তির ইতিহাস একটু জানার প্রয়োজন ।
১৯৯১ থেকে ১৯৯৫ সাল- এই কটা বছর দেশের অন্যান্য রাজ্যের মত পশ্চিমবঙ্গেও সার্বিক সাক্ষরতার অবভযানের যে দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিভিন্ন গবেষকদের দৃষ্টিগোচর হয় সে দুটি হল: এক কোটির অধিক নিরক্ষর পশ্চাৎপদ মানুষ সাক্ষরতা অভিযানের সামাজিক প্রক্রিয়ায় নানাভাবে অনুপ্রাণিত হয়ে সাক্ষরতা কেন্দ্রে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেছিলেন। লক্ষ ছিল ব্যবহারিক জীবনের প্রয়োজনে ন্যূনতম শিক্ষামান অর্জন করা। অবশ্য এই কর্মসূচির পিছনে ছিল আন্তর্জাতিক প্রভাব (১৯৯০ সালের থাইল্যান্ডের জুমতিয়েন কনফারেন্স) যেখানে ভারত ছিল অন্যতম স্বাক্ষরকারী দেশ। দুই, নানা সামাজিক প্রভাবে নিজেদের আত্মোপলব্ধি থেকে সাক্ষরতা কর্মসূচিতে নথিভুক্ত নিরক্ষর অভিভাবকুল তাদের সন্তানদের (প্রথম প্রজন্ম) বিধিবদ্ধ বিদ্যালয়ে পাঠানোর তাগিদ অনুভব করেন। দ্বিতীয়টি সাফল্য থেকে সমস্যায় উত্তরণ ঘটায়। অর্থাৎ সরকার প্রস্তুত ছিল না লক্ষ লক্ষ প্রান্তিক পরিবারের প্রথম প্রজন্মের শিক্ষার্থীর জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করার জন্য। চিরাচরিত ভাবেই প্রান্তীয় এইসব মানুষজন বিশেষ করে তপশিলি জাতি, জনজাতি গোষ্ঠীর মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে কোনও না কোনও গ্রামের প্রান্ত সীমায়, জঙ্গলের ভিতর কিংবা আশেপাশে, পাহাড়ের কোল কিংবা কোনও বিচ্ছিন্ন ভৌগোলিক এলাকায় বসবাস করে আসছেন। যেখানে সরকারি পরিষেবা চুঁইয়ে পড়ে। কিংবা তাঁরা সরকারি সাহায্য দাবি করতেই জানতেন না সেই নীরবতার সংস্কৃতির কারণে।
স্বাধীনোত্তর ভারতের সামস্ততান্ত্রিক কাঠামোর মধ্যে বর্ধিষ্ণু জনগোষ্ঠীর নেতৃত্বে যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতো সেখানে এই প্রন্তীয় মানুষ নানা কারণে এক্সক্লুসান ছিল। তাদের শিশুদের অধিকাংশের কাছে এইসব প্রতিষ্ঠান নানা কারণে ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল।
ঠিক এই প্রেক্ষাপটে প্রান্তিক পরিবারের নতুন প্রজন্মের লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীর কাছে শিক্ষার প্রাতিষ্ঠানিক সুযোগ সৃষ্টি করতে অত্যন্ত নমনীয় প্রক্রিয়ায় বা বিধি নিয়মে রাতারাতি যাতে স্থানীয় মানুষ প্রতিষ্ঠান স্থাপন করতে পারেন সেই লক্ষ্যে শিশু শিক্ষা ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মসূচির অবতারণা। পঞ্চায়ত বিভাগের এই উদ্যোগের এক দিকে যেমন লক্ষ্য ছিল শিশুর কাছে শিক্ষা পৌঁছে দেওয়া তেমনি বিদ্যালয় বিভাগের কাজে সহায়তা দেওয়া।
শিশু শিক্ষা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মসূচি রূপায়ণের নমনীয় প্রক্রিয়ার মধ্যে অন্যতম ছিল:
১. শিশু শিক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করার প্রস্তাব গ্রহণ করবে স্থানীয় অভিভাবকগণ এবং অবশ্যই তা পঞ্চায়েতের সঙ্গে আলোচনা করে।
২. শিশুর বাড়ির ১ কিলোমিটারের মধ্যে কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে।
৩. স্থানীয় মানুষই জমি সংগ্রহ ও স্থানীয় সম্পদের সহায়তায় পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ করবেন।
৪. বিধি নিয়ম মতো পরিচালন কমিটি শিক্ষা সহায়িকা নিয়োগ করবেন।
৫. শিক্ষা সহায়িকাগণ ১০০ শতাংশ মহিলা হবেন।
৬. শিক্ষা কেন্দ্র পরিচালনার দায়ভার, নজরদারি, হিসাব সংরক্ষণ সবই পরিচালন কমিটির দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।
৭. বিদ্যালয় শিক্ষা বিভাগ কর্তৃক প্রকাশিত পাঠকক্রম ও পাঠ্যত পুস্তক এখানে অনুসৃত হবে।
৮. বিদ্যালয় থেকে শিশু শিক্ষা কেন্দ্র এবং শিশু শিক্ষা কেন্দ্র থেকে বিদ্যালয়ে ট্রান্সফারের সুযোগ থাকবে।
৯. পঞ্চায়েত দপ্তর ‘রাজ্য শিশু শিক্ষা মিশন' নামে একটি স্বতন্ত্র সংস্থার দ্বারা সামগ্রিক কর্মসূচি পরিচালনা করবে। ১০. পঞ্চায়েত দপ্তর শিক্ষাকর্মীদের বেতন ভাতা ও পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য অর্থ বরাদ্দ করবে।
কালক্রমে একদিকে ৮২% প্রান্তিক পরিবারের নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থী অপর দিকে ১০০% গ্রামীণ মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত এই কর্মসূচি জনমানসে মান্যতা আদায় করে নেয়, যা বিভিন্ন স্তরের গবেষকদের কাছে গবেষণার বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়ায়। এই কর্মসূচির মান্যতার দিক বিবেচনা করে অমর্ত্য সেনের প্রতীচী ট্রাস্টের পক্ষ থেকে এক সমীক্ষা করা হয় যেখানে অনেক ইতিবাচক দিক চিহ্নিত হয়। এই পর্যন্ত অনেক সম্ভবনা নিয়ে কর্মসূচিটি রূপায়িত হয়ে আসছিল।
ইতিমধ্যে ২০০৯ সালে ভারতে শিক্ষার অধিকারের আইন, ২০০৯ লাভ হয় এবং ২০১১ সালে রাজ্যে সরকার পরিবর্তন হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে শিশুশিক্ষা ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মসূচি নানা সমস্যার আবর্তে পড়তে শুরু করে যার মধ্যে অন্যতম হল:
১. শিক্ষার অধিকারে আইন অনুসারে এই বৃহৎ কর্মসূচি রূপায়ণের কোনও বিধি প্রনয়ণ করা হলনা। যদিও ভারত সরকারের কাছে রাজ্য সরকারে পক্ষ থেকে এই কেন্দ্রগুলিকে বিধিবদ্ধ বিদ্যালয় হিসাবে মান্যতা দিয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হ’ল এবং School GIS এ এই তথ্য উল্লেখ করা হল।
২. পঞ্চায়েত দপ্তরের নির্দেশিকা অনুসারে যারা শিক্ষাকর্মী হিসেবে যুক্ত ছিলেন তাদের অধিকাংশই এখন অবসর নিয়েছেন কিংবা অবসরের মুখে। অথচ আনুমানিক ২০০৯ সাল থেকে এই সব শূণ্য পদে কর্মী নেওয়ার কোনও নির্দেশিক প্রকাশিত হয় নি। ফলে বহু শিক্ষা কেন্দ্র শিক্ষকবিহীন অবস্থায় পড়ে থাকলো যা প্রান্তিক পরিবারের শিশুর কাছে একটা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ালো।
৩. রাজ্য সরকার প্রাকাশিত নতুন পাঠ্য পুস্তক ও অন্যান্য নির্দেশাবলী মান্য করে চলার জন্য শিক্ষাকর্মীদের যে প্রশিক্ষণের দরকার ছিল তার যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় নানা কারণে এই কর্মসূচির মান ব্যহত হতে শুরু করলো।
৪. শুরুতে এই কর্মসূচির উপর যে মজবুত তদারকি ব্যবস্থা ছিল (শিশু শিক্ষা মিশনের উদ্যোগে) তা ক্রমশ শিথিল হয়ে পড়লো।
৫. রাজ্য শিশু শিক্ষা মিশনের পক্ষ থেকে যে এ্যাকাডেমিক সাপোর্ট দেওয়ার কথা ছিল এবং পরিদর্শন ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছিল তা প্রায় নিঃশেষ হয়ে পড়লো।
ঠিক এই রকম একটি দুর্বল অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে শিক্ষাকর্মীদের মধ্যে নানা অসন্তোষ দানা বাঁধতে শুরু করে। তারা ক্রমশ দিশাহীন হতে থাকে এবং নানাভাবে ধর্ণা অবস্থানে চলে যায়। এই পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ সালের শেষে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত মতো এবং শিক্ষাকর্মীদের বেশিরভাগ অংশের দাবি মতো শিশু শিক্ষা কর্মসূচি পঞ্চায়েত দপ্তরের হাত থেকে বিদ্যালয়দপ্তরে স্থানান্তরিত হয়। এই নিয়ে যদিও রাজনৈতিক ও শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের মধ্যে ইতিবাচক ইঙ্গিত ছিল যে শিক্ষা দেখবে শিক্ষা বিভাগ। পঞ্চায়েতের কাজ শিক্ষা দেখা নয়। যদিও তার সাংবিধানিক অধিকার আছে। আর আছে বলেই ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় শিক্ষার স্ট্যান্ডিং কমিটি আছে। যদিও তাদের ভূমিকা নিয় নানা প্রশ্ন আছে।
শিশু শিক্ষা কর্মসূচি বিদ্যালয় শিক্ষাবিভাগে যাবার প্রাক্কালে ভারতে কোডিড পরিস্থিতের কারণে বিদ্যালয়গুলি যেমন বন্ধ রাখতে হয় তেমনি শিশু শিক্ষা ও মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রগুলিও। ফলে প্রান্তিক পরিবারের শিশুরা না পেলো পারিবারিক সহায়তা না পেলো বিদ্যালয়ের সহায়তা। অনেক শিশু বিদ্যালয় ছেড়ে কোথায় গেল তার কোনও সঠিক হদিস সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে থাকলো না।
এই অসহায় পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েতের অধীনে শিশু শিক্ষা মিশন কর্তৃপক্ষ ২০২১ সালের প্রথমার্ধে ইউনিসেফের সহায়তায় এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাহায্যে পাঁচটি জেলায় যথাক্রমে মালদা, মুর্শিদাবাদ নদীয়া, দক্ষিণ ২৪ পরগণা এবং ঝাড়গ্রাম জেলার ৯৬ টি ব্লকের অধীন ৮৩২৪ টি শিশু শিক্ষা কেন্দ্র ও ৫২৫টি মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রে সমীক্ষা চালায়। সমীক্ষা থেকে যে তথ্য বেড়িয়ে আসে তাতে দেখা যাচ্ছে যে, কোভিড সময়কালে ২১৯ জন শিশু আদৌ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয় নি৷ ১১৫২ জন শিশু বিভিন্ন শ্রেণীতে বিদ্যালয়ছুট হয়েছে। ১৫০৭ জন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু যাদের বেশিরভাগেরই কোনও টেষ্ট করা হয় নি। ৮৭২৩ জন শিক্ষার্থী (২০১৯ সালের শেষ মূল্যায়নে ) ৩০ শতাংশের কম নম্বর পেয়েছে।
বিদ্যালয়ে ভর্তি না হওয়া শিশুদের মধ্যে ৪৮% বাবা এবং ৫৯% মা নিরক্ষর। ৪৯% বাবা এবং ২৮% মা কৃষি শ্রমিক। ১৪.৫% শিশু বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চায় না। ২৮.৫% বাবা মা শিশুদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে চায় না। বিদ্যালয়ছুট শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৩২% হিন্দু এবং ৬৭.৫% সংখ্যালঘু মুসলিম । ৩৬% শিশুর পড়াশোনা করতে অনীহা। প্রায় ১৯% শিশু অর্থ উপাজনের কাজে যুক্ত এবং ১৩.৫% শিশু বাবা-মার পেশাগত কাজে সাহায্য করছে। ৪৭% শিশু আর বিদ্যালয়ে ফিরতে চায় না। ৩৮% অভিভাবক তাদের সন্তানকে আর বিদ্যালয়ে পাঠাতে চান না। ৫২% বাবা ৫৪% মা নিরক্ষর। ৩৯% বাবা এবং ১৮% কৃষি শ্রমিক বা ক্ষেত মজুর। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের মধ্যে ৪১% হিন্দু এবং ৫৮.৫% মুসলিম। এদের মধ্যে ৫৪% বালক এবং ৩৮% বালিকা বিদ্যালয়ে নথিভুক্ত বাকিরা বিদ্যালয়ের বাইরে। ৩৪% বাবা ও ১০% মা নিরক্ষর।
শতকরা ৩০ ভাগের কম নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে (মোট ৮৭২৩ জন) ৪৪% হিন্দু এবং ৫৩% মুসলিম। ৩৫% বাবা এবং ৩৬% মা নিরক্ষর। ৩৬% বাবা এবং ১১% মা দিনমজুর। ৩৫% শিশু কোভিড পিরিয়ডে হোম সাপোর্ট পেয়েছে। ৩৭% শিশু কোনও স্তর থেকে কোনও শিক্ষা সহায়তা পায় নি। ৫০% শিক্ষার্থী কোভিড পিরিয়ডে ওয়ার্কশিট পেয়েছে বাকিরা কোনও খোঁজই জানত না।
উল্লিখিত প্রেক্ষাপটে এটা উল্লেখ করতে হয় যে, প্রান্তিক পরিবারের যে সব শিশুদের শিক্ষা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে পঞ্চায়েত দপ্তর এগিয়ে এসেছিল এবং যে সম্ভবনা দেখা দিয়েছিল তা বর্তমান পর্যায়ে নানা সমস্যায় জর্জরিত। এখন দেখার বিষয় দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা হিসাবে বিদ্যালয় শিক্ষা বিভাগ একটি সম্ভাবনাময় কর্মসূচিকে কীভাবে সমস্যামুক্ত করে প্রান্তিক পরিবারের শিশুদের পাশে দাঁড়াতে পারে।

Copyright © 2021 - 2022 Shramajeebee Bhasha. All Rights Reserved.