বামপন্থা ও গণতন্ত্রের কথোপকথন
[রাজ্য]
শ্রমজীবী ভাষা, ১৬ অগাস্ট, ২০২১— যে বছর ভারত স্বাধীন হল, সে বছর জন্মেছিলেন রমাপদ দাস। পঁচাত্তর বছরের রমাপদ নিজেও জানেন না, তাঁরই পূর্বপুরুষ ছিলেন রামা কৈবর্ত্ত। সেই যাঁকে দেখিয়ে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ‘চসমা-চোখে’ বাবুদের মোক্ষম প্রশ্ন করেছিলেন, “কাহার এত মঙ্গল? হাসিম শেখ আর রামা কৈবর্ত্ত দুই প্রহরের রৌদ্রে, খালি মাথায়, খালি পায়ে এক হাঁটু কাদার উপর দিয়া দুইটা অস্থিচর্ম্মবিশিষ্ট বলদে, ভোঁতা হাল ধার করিয়া আনিয়া চষিতেছে, উহাদের কি মঙ্গল হইয়াছে? উহাদের এই ভাদ্রের রৌদ্রে মাতা ফাটিয়া যাইতেছে, তৃষায় ছাতি ফাটিয়া যাইতেছে, তাহারা নিবারণজন্য অঞ্জলি করিয়া মাঠের কর্দ্দম পান করিতেছে; ক্ষুধায় প্রাণ যাইতেছে, কিন্তু এখন বাড়ী গিয়া আহার করা যাইবে না, এই চাষের সময়। সন্ধ্যাবেলা গিয়া উহারা ভাঙ্গা পাতরে রাঙ্গা রাঙ্গা বড় বড় ভাত, লুন, লঙ্কা দিয়া আধপেটা খাইবে। তাহার পর ছেঁড়া মাদুরে, না হয় ভূমে, গোহালের এক পাশে শয়ন করিবে—উহাদের মশা লাগে না। তাহারা পরদিন প্রাতে আবার সেই এক হাঁটু কাদায় কাজ করিতে যাইবে—যাইবার সময়, হয় জমীদার, নয় মহাজন, পথ হইতে ধরিয়া লইয়া গিয়া দেনার জন্য বসাইয়া রাখিবে, কাজ হইবে না। নয় ত চষিবার সময় জমীদার জমীখানি কাড়িয়া লইবেন, তাহা হইলে সে বৎসর কি করিবে? উপবাস—সপরিবারে উপবাস।” ইংরেজ আমলে দেশের কী মঙ্গল হয়েছে, তা নিয়ে এমন শক্ত শক্ত প্রশ্ন করার পর খাস কথাটা বলেই দিয়েছিলেন, “তুমি আমি কি দেশ? তুমি আমি দেশের কয় জন? ... দেশের অধিকাংশ লোকই কৃষিজীবী। ... যেখানে তাহাদের মঙ্গল নাই, সেখানে দেশের কোন মঙ্গল নাই।”
তখন বঙ্কিমচন্দ্র যাঁকে বলেছেন ‘দেশের মঙ্গল,’ এখন তাকে বলে ‘দেশের উন্নয়ন।’ রমাপদ দাস কতটা ভাল রয়েছেন তাঁর অতিবৃদ্ধ-প্রপিতামহ রামা কৈবর্ত্তের থেকে, তা দেশের মঙ্গল-তথা-উন্নয়নের একটা মাপ হতে পারে। তা, রমাপদ যখন পঁচাত্তর বছর বেঁচেছেন, দেশের গড় আয়ুর চাইতেও প্রায় বছর দশেক বেশি, তখন বছর বছর উপোস কি আর করেছেন? দু’বেলা ভাত খান। রাঙা, মোটা চালের ভাত নয় তা বলে। তাঁর জমিতে বর্ষায় লাল স্বর্ণ ধানের চাষ হয় বটে, কিন্তু সে চালকলে দিয়ে সরকারি দর পাওয়ার আশায়। রেশনে পাওয়া মোটা চাল চোদ্দ টাকা কিলো দরে বাড়ির মেয়েরা বেচে দেয় চালের দোকানে। রমাপদ সপরিবারে খান মিনিকিট চাল। গ্রামে কারও বিয়েশাদি হলে প্যাকেটের লম্বা, সরু চাল দিয়ে পোলাও, বিরিয়ানি হয় আজকাল। রমাপদ সে সব চালে স্বাদ পান না। তবে খেয়ে নেন, পাত পরিষ্কার করে। তাঁর থালায় কেউ এক কণা ভাতও কখনও পড়ে থাকতে দেখেনি। রামা কৈবর্ত্তের উপবাস হয়তো রমাপদ দাসের মগ্নচৈতন্যে রয়েছে। তাঁর জন্মের বছর পাঁচেক ঘটে গিয়েছে তেতাল্লিশের সেই ভয়ানক মন্বন্তর, তাঁর শৈশবেও তার রেশ ছিল। রমাপদের জেঠঠাকুর্দার ছেলেরা গ্রাম ছেড়ে শহরে গিয়েছিল, আর ফেরেনি। বড়পিসির শ্বশুরবাড়ির গ্রামও নাকি ভূতুড়ে গাঁ হয়ে গিয়েছিল। না খেয়ে ঠিক কারা মরেছিল, কখনও শোনেননি রমাপদ। তবে পান্তার শেষ দানাটাও পড়ে থাকত না, শিশুর সানকিতেও না।
জমিদারি প্রথা যখন আইন করে উঠে গেল, রমাপদর বয়স তখন সবে সাত বছর। গ্রামে আইনের খোঁজ কেউ রাখত না। গ্রামের সিংহি আর মুখুজ্যেদের জমিতে জনমজুরের কাজ করত অধিকাংশ চাষি। ধান, টাকা ধার নিয়ে সংসার চলত, জন খেটে শোধ দিতে হত। বাবা-কাকারা সিংহিদের দুই কর্তাকে বলত ‘বড় হুজুর, ছোট হুজুর।’ নিজের দু-চার বিঘে জমির ফসল কাটার আগে মালিকের ঘরে ফসল তুলেছেন বাবা-কাকা, চিরকাল। নিজেদের প্রজা ভেবেছেন সারা জীবন। বাড়িতে নেতাজির ছবি ছিল, স্বাধীনতা দিবসে কাকা তাতে মালা পরাতেন। রমাপদর অমন একটা টুপি পরার শখ ছিল।

এই কাকার বন্ধু নরুকাকা — নরোত্তম মণ্ডল — কলকাতায় মিছিল করতে গিয়ে আর ফিরল না। সবাই বলল, খাদ্যমিছিলে পুলিশে গুলি চালিয়েছে, মরে গিয়েছে, পুলিশ লাশ পুড়িয়ে দিয়েছে। নাকি বিনা পয়সায় চাল পাবে বলে গিয়েছিল। বাজারে তখন চালের কিলো পাঁচ টাকা, রেশনে চাল মেলে না, কেরোসিন মেলে না। সিংহিদের ধান মস্ত কালো হাঁড়িতে সেদ্ধ করছেন মা-কাকিমা, তেতেপুড়ে চেহারা হয়ে গিয়েছে পেত্নীর মতো, দেখতেন রমাপদ। তাঁর তখন বারো বছর বয়স। সে বছরই মামার বাড়ি এসে ছয় ক্লাসে ভর্তি হলেন। তাঁদের গাঁয়ে ছোট ইস্কুল ছিল কেবল। স্কুলের খেলার মাঠের এক দিকটা মাঝেমাঝে কারা সব মিটিং করত, সেখানে প্রথম শুনলেন ‘কমরেড’ কথাটা।
স্কুলের পড়া শেষ হওয়ার আগেই বাবা ডেকে নিলেন। সিংহিদের দুই তরফই গ্রাম ছেড়ে শহরে চলে গিয়েছে তত দিনে। চাষিদের সুবিধে দরে জমি দিয়ে দিচ্ছে। বাবা-কাকাদের কিছু ডাঙা জমি ছিল, এবার কিছু দোফসলা জমি হাতে এল। যত দিনে সিপিএম সরকার এল, ততদিনে রমাপদ বলিয়ে-কইয়ে জওয়ান, পার্টিকর্মী। আটাত্তরের বন্যায় তিনিও গামছা বেঁধে জলে নেমে টাকা বিলি করলেন। মুখুজ্যে-দত্তদের খাস হয়ে-যাওয়া জমি যখন বিলি-বাঁটোয়ারা হল, রমাপদ কাকার ছেলেদেরও পাট্টা পাইয়ে দিয়েছিলেন। পঞ্চায়েতে মিনি পাম্প এল। রমাপদ পার্টির সঙ্গে কথা বলে এমন জায়গায় ট্রান্সফর্মার লাগালেন, যে তাঁর সংসদ এলাকার পাম্পগুলো ইলেকট্রিক লাইন পেয়ে গেল। পরের বছর ভোটে দাঁড়িয়ে জিতলেন।
জেলায় রমাপদর ব্লকেই প্রথম শীতে আলুচাষ শুরু হল। প্রায় চল্লিশ বছর বয়সে বাপ-ঠাকুর্দার চিরকালের চেনা ধানের বীজ বাদ দিয়ে সরকারের দেওয়া ধানবীজ লাগালেন রমাপদ। বেঁটে গাছ, প্রচুর শীষ। পাম্পের জলে সেচ দিয়ে বোরো ধান করলেন। ধান, আলু, সর্ষে, তিল — রমাপদের জমিতে সম্বৎসর ফসল। বড় ছেলে প্রাথমিক স্কুলে চাকরি পেল, ছোটটাকে সারের দোকান করে দিলেন রমাপদ। মেয়েদের বিয়ে দিতে গিয়ে জমি বিক্রি করেছেন, ইচ্ছে ছিল ছেলেদের বিয়েতে ফিরে পাবেন। কিন্তু তারা নিয়েছে মোটরবাইক, নগদ। এই তো সব বুদ্ধি।
এক এক দিন ভাবেন, ভালই করেছে। জমির দিকে তাকালে বুক কাঁপে আজকাল। যে জমি ছিল দলদলে, নরম, এখন তা শক্ত, পোড়া কাঠ। ছোট ছেলে যখন ভাড়া-করা ট্র্যাক্টর চালায়, যেন রামপদের বুকের উপর দিয়ে চলে। বুঝতে পারেন, মাটির এক একটা স্তর শক্ত হয়ে চেপে বসে যাচ্ছে, থেঁতলে যাচ্ছে কেঁচো-কেন্নো, যারা চিরকাল মাটিকে উর্বর করেছে। কিন্তু উপায় কী, লেবার কই? যে দিন ছোট ছেলে হার্ভেস্টরে ধান কেটে জমিতে আগুন ধরালো খড় পোড়াতে, রমাপদর ‘চোখ জ্বলছে’ বলে চোখের জল গোপন করেছিলেন। আজকাল নিজের জমিতে এমন পোকা দেখেন, এমন রোগ দেখেন গাছের, যা কখনও দেখেননি। এক বার পাড়ার সুরঞ্জন গমের এমন বীজ দিল, বড় বড় ঘাস বেরিয়ে গেল। তাকে মারতে আবার খরচ করে কড়া ওষুধ ঢালতে হল। ছোটখোকা নিজের দোকান থেকে যে সব বিষ ফসলে দেয়, সে সব বিষ-লাগা ফসল নিজের বাড়িতে ঢোকায় না।
সে দিন বাজারের সামনের মোড়টায় সবজি ফেলে পথ অবরোধ করেছিল চাষিরা, ছোটখোকাও ছিল। একবার টুকটুক করে গিয়ে দেখে এসেছেন রমাপদ – কাঁচালঙ্কার ঘন সবুজ রঙের একটা ছোটখাট পাহাড়, পাশে গাদা গাদা মিষ্টি কুমড়ো গড়াগড়ি খাচ্ছে। নরুকাকার কথা মনে পড়ে গিয়েছিল রমাপদর। ওই মোড়টাতেই একদিন বক্তৃতা করেছিলেন রমাপদও – তেভাগা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে, আন্দোলনের ৫০ বছরে। রমাপদ তখন উনপঞ্চাশ, পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন। কেউ ‘অ্যাই রামা’ বলার সাহস করে না, বলে ‘রমাবাবু।’ পার্টির নেতাদের থেকে জেনেছিলেন, ফসলের তিন ভাগ চেয়ে বাইশজন পুলিশের গুলি খেয়েছিল উত্তরবঙ্গে। এখন বর্গাচাষি পাবে তিনভাগ, নইলে আধা। রমাপদ অবশ্য জমিতে বর্গা বসাননি, জমি লিজ দেন। তাঁর যখন সময় ছিল, অনেক ছোট চাষি তাঁর কাছে জমি বাঁধা রেখে ছাড়াতে পারেনি। তারা দু-তিনজন সেই জমিই তাঁর থেকে লিজ নিয়ে চাষ করে। তারপর তো নিজেই দেখলেন, নন্দীগ্রামে চাষি গুলি খেল। খারাপ লেগেছিল, তবু জানার চেষ্টা করেছিলেন, বিঘের দাম কত টাকায় রফা হত, যদি জমি কিনত সারের কারখানা? জানতে পারেননি। রাস্তা হওয়ার জন্য জমি নিলে নাকি এখন অনেক টাকা দিচ্ছে সরকার?
টিভির খবরে দেখেন তুলোচাষির আত্মহত্যা। ছেলেরা তা নিয়ে আলোচনা করে, তিনি চুপ করে থাকেন। একবার চার বিঘেতে এক সঙ্গে সূর্যমুখী চাষ করেছিলেন রমাপদ, শ্রীধরের দোকান থেকে বীজ, সার, ওষুধ নিয়েছিলেন, সেই সঙ্গে আশি হাজার টাকা, মাসিক সুদ একশো টাকায় দশ টাকা। সব গাছ যখন শুকিয়ে গেল, প্রায় দেড় লক্ষ টাকা দেনা দাঁড়াল। সে বার আলুর বাজারও মন্দা, বস্তা চারশো টাকাও ওঠেনি। শ্রীধরের বউ বাড়ি এসে গিন্নিকে কথা শোনাত। কত রাত ঘুমোননি রমাপদবাবু। চাষি কেন গলায় দড়ি দেয়, বোঝেন না কি? দেখেন না কি, ফসল গড়াগড়ি খায় রাস্তায়, ধান-পাট চাষির ঘরে পড়ে থাকে, এ দিকে গ্রামের ছেলেরা কাজের খোঁজে সব ভিনদেশে। বড় নাতি রাজস্থানে মার্বেলের কাজ করে, লকডাউনে কেবল লঙ্কা-নুন দিয়ে মোটা ভাত খেয়ে বেঁচেছিল, এক এক দিন উপোস। কারখানার মেঝেতে মাদুর পেতে শোয়, তবু চাষ করবে না। ছোট নাতি দিল্লিতে বিদ্যুতের টাওয়ারের কাজ করতে গিয়েছে, পুরো কাজ না করলে ঠিকাদার একটিও টাকা দেবে না, আধার কার্ড জোর করে নিয়ে রেখে দিয়েছে। নিজের মনেই মাথা নাড়েন রমাপদ। ইচ্ছেমতো আটকে রাখবে, এ কি জমিদারি?
রমাপদ দেখেন, আগে একান্নবর্তী সংসার ভেঙে যে যার নিজের খুপরিতে ঢুকেছিল। এখন ফসলের খেতেও যে যার, সে তার। ভাড়া-করা লোক মেশিন চালায়, রুইতে, তুলতে। বর্ষা নামলে পরিবারের সবাই, গ্রামের সবাই মিলে ধান রুইতে নামা, সে আর নেই। জমির মালিকের বাড়ি জনমুনিষ থাকা, দু’বেলা কুড়ি-পঁচিশটা পাত পড়া, গাইগরুর দেখাশোনা, সব অতীত। জোরে শ্বাস টেনে গোবরের গন্ধ পাওয়ার চেষ্টা করেন রমাপদ, মেলে না। চিরকাল শুনেছেন তাঁরা ‘হালিয়া কৈবর্ত্ত,’ কিন্তু হাল কবেই বিদায় করেছেন বাড়ি থেকে। মাঝেমাঝে টিভিতে হাল-চষা চাষি দেখেন। হাল গিয়েছে, জমিও কত দিন থাকবে, কতটা থাকবে, কে জানে? বড় বউমা চলে যেতে চায় টাউনে বাড়ি করে। বড়খোকা জমি বুক করেছে। এ সব খবর গ্রামে ছড়িয়ে যায়। পাশের বাড়ির দানেশ শেখ তিন বছরের জন্য কলাবাগান লিজ চেয়ে রেখেছে। রমাপদ কি আটকাতে পারবেন? ভূমিহীন খেতমজুর দানেশের দৃষ্টি তিনি চেনেন। এক দিন ওই চোখেই রমাপদ দেখতেন সিংহিদের খেত, নন্দীদের পুকুর।
জমি রেখেই বা কী হবে? বাজারের দিকে হাঁটতে হাঁটতে রমাপদ ভাবেন। ছোটখোকা আজ এ পার্টি, কাল ও পার্টিতে নাম লেখাচ্ছে, কিন্তু সরকারকে ধান দিতে গিয়ে কেবল কুপন হাতে ফিরছে। ছ’মাস, আট মাস পরে আসছে ধান বিক্রির দিন। জলের দরে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে ফড়েকে, আলুর বাজার এক বছর ভাল গেল তো চার-পাঁচ বছর ফক্কা। নিজেরা হিমঘরে আলুর বস্তা রেখেও লোকসান হয়ে যাচ্ছে। বড়খোকার ছোট ছেলেটা কী এক সরকারি স্কিম দেখিয়ে নিজের আলু নিজে বাজারে বেচতে গিয়েছিল, বাজারের ফড়েরা মারতে বাকি রেখেছে। বলেছে, তুই রমাবাবুর নাতি বলে ছেড়ে দিলাম। ছোটখোকা বকাঝকা করল, “জানিস না ওদের সিন্ডিকেট আছে?” রমাপদর বুক কেঁপে গিয়েছিল। চাষির ফসল ফলানোর স্বাধীনতা আছে, বিক্রির স্বাধীনতা নেই? সরকারও নেবে না, বাজারও ধরতে দেবে না, চাষির কী হবে তা হলে? তবে কি পিএম কিসান, কৃষকবন্ধুর টাকা ঢোকার নামই উন্নয়ন?
রমাপদবাবু এটিএম থেকে টাকা তুলে স্ত্রীর ওষুধ, নিজের জন্য বিড়ির বান্ডিল কেনেন। পাঁচশো টাকার একটা নোট আলাদা করে ফতুয়ার ভিতরের পকেটে রাখেন মুক্তোর মায়ের জন্য। ওরা বাগদি, রমাপদর সংসারের কাজ, খেতের কাজ তুলে দেয়। রমাবাবুরই খেতের আড়াই কাঠা লিজ নিয়ে ভিন্ডি বুনেছে মুক্তোর মা, এখন একটু টাকা চেয়েছে পোকার ওষুধের জন্য। ছোটখোকা ধারে দেবে না দোকান থেকে। তা টাকা দেবেন রমাবাবু, ছেলেদের লুকিয়েই দেবেন। চাষ করেই তো খেতে হবে গরিবকে।