বামপন্থা ও গণতন্ত্রের কথোপকথন
[রাজ্য]
সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকা যেমন রাঙাবেলিয়া গোসাবা পাখিরালয় বাসন্তী সাগরদ্বীপ সহ বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ অত্যন্ত কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। করোনা ও লকডাউনের জেরে অধিকাংশ মানুষের কাজ নেই। তার ওপরে গত বছর আমফান আর এ বছর ইয়াসের আঘাতে প্রাণান্ত অবস্থা। বহু এলাকা জলোচ্ছাসে ভেসে গেছে। অসংখ্য ঘরবাড়ি ঘুর্ণিঝড়ে ভেঙে গেছে। গবাদি পশু ভেসে গেছে। চাষের জমির ফসল জলের তলায়। নোনা জল ঢুকে বহু জমি আগামী চাষের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এমনকি ঘরে সারা বছরের সঞ্চিত চালও জলে ভেসে গেছে অথবা নষ্ট হয়ে গেছে। মহাজনের কাছ থেকে টাকা ঋণ নিয়ে যে চাষ করেছে সেই টাকা শোধ করবে কি করে সেই চিন্তায় মানুষের মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। এর আগে আয়লা সুন্দরবনের মানুষকে সর্বস্বান্ত করে দিয়েছিল। সেই আঘাত এখনও কাটিয়ে ওঠা যায়নি। তারা যখনি অতিকষ্টে আবার একটু গুছিয়ে উঠতে চেষ্টা করে ঠিক সেই সময়েই প্রাকৃতিক দুর্যোগ এসে আবার সব কিছু তছনছ করে দেয়। একে কাজ নেই তার ওপরে ছেলে মেয়ে বৌ নিয়ে পেটে ভাত নেই। সরকারি ত্রাণ খুব সামান্যই তাদের কাছে পৌঁছেছে। বাইরে থেকে কিছু স্বেচ্ছাসেবী দল ত্রাণ বিলি করেছে বটে কিন্তু তাতে আর কতটুকু পাওয়া যায়।
এরই মধ্যে কিছু সুযোগসন্ধানী ঠিকাদাররা পুরুষদের স্বল্প মজুরিতে বাইরে কাজে নিয়ে যাচ্ছে। কি করবে কোনও কাজ নেই চলবে কি করে? তাই ঘরে পড়ে থাকছে বৌ ছেলে মেয়ে বৃদ্ধ বাবা মা। তারা প্রায় অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে। আবার কিছু অসাধু লোক ঘুরে বেড়াচ্ছে যারা বাইরে কাজ দেবার নাম করে অল্প বয়স্ক মেয়েদের পাচার করে দিচ্ছে। প্রতি বছর পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রচুর মেয়ে পাচার হয়ে যায়। তাদের একটা বড় অংশ উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার সুন্দরবন এলাকা থেকে। গরিব মানুষের দারিদ্র ও অসহায়তার সুযোগ নিয়ে। এদের করুণ অবস্থার সুযোগ নিয়ে। এদের করুণ অবস্থার দিকে কারো নজর নেই। এইসব প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে পরে মানুষের অসহায়তার সময় আড়কাঠিরা সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং তারা গ্রামেরই প্রভাবশালী ব্যক্তিদের পরোক্ষ মদতে অনেক কিছুই করে। এই অসহায়তা থেকে সুন্দরবনের মানুষকে কে বাঁচাবে।